নেতানিয়াহুসহ ৩ জনকে হত্যার ‘ইরানি পরিকল্পনা’ ঠেকানোর দাবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইরান। সেই পরিকল্পনা ঠেকানো হয়েছে বলে দাবি করেছে এ গোয়েন্দা সংস্থা।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত ইরানের রাজধানী তেহরানে হামাসের তৎকালীন প্রধান ইসমাইল হানিয়ার গুপ্তহত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এ পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অবশ্য ইসরাইল কখনই হানিয়ার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেনি। আরও দাবি করা হয়েছে, ইরান ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের হত্যার পরিকল্পনাও করেছে।
গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে, তুরস্কে দীর্ঘদিন বসবাস করা ইসরাইলি এক ব্যবসায়ীকে কাজে লাগিয়ে এ হত্যা পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ওই ব্যবসায়ীর ইরানি ও তুর্কি লোকদের সঙ্গে চেনাজানা আছে। পরিকল্পনাটি কার্যকর করার জন্য গত এপ্রিলে তুর্কি নাগরিক আন্দ্রেই ফারুক আসলান ও গুনেইদ আসলান আর্থিক লেনদেনের জন্য ইসরাইলি ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তাদের মধ্যস্থতায় তুরস্কের সামান্দগ শহরে এডি নামে এক ইরানি ধনকুবেরের দুই প্রতিনিধির সঙ্গে মে মাসে দেখা করেন সেই ব্যবসায়ী।
এডি ইরান থেকে তুরস্কে যেতে পারবেন না, জানার পর ইসরাইলি ওই ব্যবসায়ী নিজেই ইরানে যান। সেখানে তিনি ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা ‘হজ’ এবং এডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাকে এই অপারেশন পরিচালনার জন্য ১০ লাখ ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়।
পরে আগস্টে সেই ব্যবসায়ী দ্বিতীয়বার ইরানে যান এবং পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করার জন্য তাকে ৫০০০ ডলার দেওয়া হয়। বিশেষ করে অস্ত্রসহ অন্যান্য যেসব উপকরণ লাগে সেগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য তাকে এ অর্থ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ইসরাইলের আরেক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কোনো এজেন্টকে ডাবল এজেন্টে পরিণত করার জন্যও তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়।
আগস্ট মাসে ওই ইসরাইলি ব্যবসায়ী একটি ট্রাকে করে ইরানে প্রবেশ করেছিলেন। এবার তিনি এডি ছাড়াও ইরানের নিরাপত্তাবাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে তাকে উল্লিখিত নেতাদের হত্যার জন্য পরিকল্পনা করার কথা জানান।
এছাড়া ওই ব্যবসায়ীকে বেশ কিছু স্থানের ভিডিও গ্রহণের জন্যও বলা হয়, যেখান থেকে নজরদারি করা যাবে। এই বাইরেও ওই ব্যবসায়ীকে বেশ কয়েকজন ইসরাইলিকে হুমকি দেওয়ার জন্যও বলা হয়। এসব ইসরাইলির সঙ্গে ইরান যোগাযোগ করেছিল তাদের হয়ে কাজ করার জন্য কিন্তু পরে তারা বেঁকে বসে।
তবে এতকিছুর পরও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত এ বিষয়ে আর কিছু জানায়নি। বিশেষ করে ওই ব্যবসায়ী তার পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পেরেছিলেন কিনা। তবে সংস্থাটি দাবি করেছে, ইরান এ ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে। এর অর্থ হলো, এ পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার পর হুমকি শেষ হয়ে গেছে, বিষয়টি এমন নয়।