প্রত্যাবাসন ঠেকাতে হামবুর্গ ইসলামিক সেন্টার প্রধানের আবেদন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম
প্রত্যাবাসন ঠেকাতে জার্মানির হামবুর্গ ইসলামিক সেন্টারের প্রধান মোহাম্মাদ হাদি মোফাত্তেহ আদালতে আবেদন করেছেন। দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময়-সীমার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি এ আবেদন করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোহাম্মাদ হাদি জার্মানি ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে হামবুর্গের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জার্মান গোয়েন্দা সংস্থা ইসলামিক সেন্টারটিকে ইরানের একটি ফ্রন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে তা নিষিদ্ধ করেছে।
আগস্টের শেষের দিকে হামবুর্গ কর্তৃপক্ষ মোহাম্মাদ হাদির প্রত্যাবাসনের আদেশ জারি করে। আদেশ অনুযায়ী, ৫৭ বছর বয়সি শিয়া সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় নেতাকে ১৪ দিনের মধ্যে জার্মানি ত্যাগ করতে হবে অথবা নিজের খরচে তার স্বদেশ ইরানে ফিরে যেতে হবে বলে জানানো হয়৷
২০১৮ সাল থেকে হামবুর্গ ইসলামিক সেন্টার বা আইজেডএইচের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন মোহাম্মাদ হাদি৷ জার্মান অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এ সংস্থাটিকে ইরান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে অভিযুক্ত করেছে৷
মোহাম্মাদ হাদির বিরুদ্ধে আগামী ২০ বছরের জন্য জার্মানিতে পুনরায় প্রবেশ ও যে কোনো ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ এ আদেশ অমান্য করলে তার তিন বছরের কারাদণ্ড হবে৷
আগস্টে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জোলিঙেন একটি ভয়াবহ হামলার ঘটনার পর দেশটির সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়৷
ইরান-জার্মান সম্পর্কে এর প্রভাব
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুযায়ী, মোহাম্মাদ হাদিকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির জার্মানির সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করা হতো৷
গোয়েন্দা সংস্থা সর্বশেষ এক বিবৃতিতে জানায়, মোফাত্তেহ তেহরানের বর্তমান শাসকদের একজন বিশ্বস্ত প্রতিনিধি৷ ইরানের রাষ্ট্রীয়-ধর্মীয় শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে৷
হামবুর্গ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ডি গ্রোটে মোফাত্তেহকে ‘জার্মানির অন্যতম বিশিষ্ট ইসলামপন্থি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা সব আইনি উপায় মেনে ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব৷
জার্মান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চরমপন্থি গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর জুলাই মাসে আইজেডএইচকে নিষিদ্ধ করা হয়৷ জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার সেই সময় এটিকে ‘ইউরোপে ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রচার কেন্দ্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন৷
জুলাই মাসে আইএফজেডের সঙ্গে যুক্ত আরও পাঁচটি শিয়া সংগঠনের বিরুদ্ধে ফেজার একই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন৷ পুলিশ আইজেডএইচ দ্বারা সমর্থিত হামবুর্গের ‘ব্লু মসজিদ’ ও দেশব্যাপী আরও তিনটি উপাসনালয়ের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়৷