কেনিয়ায় আদানির প্রকল্প ঘিরে বিক্ষোভ, ভারতবিরোধিতা দেখছে কংগ্রেস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১০ পিএম
ছবি সংগৃহীত
দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে বেশ চ্যালেঞ্চের মুখে রয়েছে ভারত। একদিকে প্রতিবেশি বাংলাদেশে নিজেদের অনুগত মিত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। মালদ্বীপে রয়েছে চীনের প্রভাবিত সরকার। অন্যদিকে পাকিস্তান আর চীনের সঙ্গে বৈরিতা তো বহু পুরোনো।
এবার ভারত নতুন করে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে আফ্রিকা অঞ্চলে। সম্প্রতি কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে একটি বিমানবন্দরের দায়িত্বভার গ্রহণের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি। তবে কেনিয়ার শ্রমিক ইউনিয়ন আদানির এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করে আসছে গত মাস থেকে। ক্রমেই এই আন্দোলন জোরদার হচ্ছে।
ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের আশঙ্কা, কেনিয়ায় এই আদানিবিরোধী বিক্ষোভ ক্রমে ভারতবিরোধিতায় রূপ নিতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, কেনিয়ার এভিয়েশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন আদানির নাইরোবি বিমানবন্দর অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ, অধিক মুনাফা ভােগ করতে আদানি গ্রুপকে বেপরোয়া সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। দেশটির বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান এককভাবে আদানি দখল নিচ্ছে।
এমন আবহে কেনিয়া ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদি ও আদানি গ্রুপের প্রধান গৌতম আদানির বিতর্কিত বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরে সরকারকে সতর্ক করেছে কংগ্রেস।
এক বিবৃতিতে দলটির মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘এটি ভারতের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। কারণ আদানির সঙ্গে অ-জৈবিক প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদির) বন্ধুত্ব এখন বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। তাই এই প্রতিবাদ সহজেই ভারত এবং ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে রূপান্তরিত হতে পারে।’
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শ্রীলংকা ও বাংলাদেশে আদানি প্রকল্পগুলো নিয়ে একই ধরনের বিতর্ক আমাদের জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুন্ন করেছে এবং ভারতের জন্য নেতিবাচক ফলাফল বয়ে এনেছে। উদাহরণস্বরূপ, ঝাড়খন্ডে
আদানির কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পরিণত হয়েছিল’।
কংগ্রেসের এই নেতা আরও বলেন, ‘শ্রীলংকার মান্নার জেলায় আদানি গ্রুপের পুনর্নবায়ণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলোও বিতর্ক উসকে দিয়েছিল। এর কারণে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভও শুরু হয়েছিল’।
জয়রাম রমেশ বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে, ভারতের সফট পাওয়ার তার পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম শক্তি। আজ, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর যোগসাজশ এই শক্তিকে কমাতে এবং বৈশ্বিক মঞ্চে ভারতের জন্য নজিরবিহীন পরিবর্তনে অবদান রেখেছে। অ-জৈবিক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বন্ধুত্বের কারণে দেশকে যেসব ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তার মধ্যে এটি একটি।’
কেনিয়ার এভিয়েশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের দাবি, আদানির সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তি বাস্তবায়িত হলে কেনিয়ার বাইরের থেকে কর্মীদের নিয়ে আসা হবে এবং এর ফলে কেনিয়ার অনেকের চাকরি যাবে।
শ্রীলংকার ৩টি, ভিয়েতনামের ২টি সহ ভারতের অন্তত ৮ বিমানবন্দরে বিনিয়োগ রয়েছে আদানি গ্রুপের।