হামাস হামলা চালানোর পর থেকেই ইসরাইলে হামলা চালানো শুরু করেছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে।
হিজবুল্লাহর অর্থ আল্লাহর দল। আশির দশকের শুরুর দিকে হিজবুল্লাহ গঠন করেছিল ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডস। উদ্দেশ্য ছিল লেবাননে ইসলামিক আন্দোলনের প্রসার ও সেখানে হামলা করা ইসরাইলিদের সঙ্গে লড়াই। মূলত শিয়া মুসলিমদের নিয়ে গঠন হয় হিজবুল্লাহ।
হিজবুল্লাহ ইসরাইলের সঙ্গে সবচেয়ে বড় আকারের যুদ্ধ করেছে ২০০৬ সালে। ইসরাইলের সঙ্গে ৩৪ দিনের সেই যুদ্ধে লেবাননের ১১২৫ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয় যাদের বেশির ভাগ ছিল সাধারণ নাগরিক।
বিপরীতে ইসরাইলে মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের যাদের বেশির ভাগই ছিল সেনা। এর পর থেকে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করে গেছে গোষ্ঠীটি।
২০১২ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সুন্নি বিদ্রোহীদের মোকাবিলায় হিজবুল্লাহকে নিয়োগের পর থেকে তাদের সামরিক সক্ষমতা বেড়েছে বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইসরাইলসহ বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ নিষিদ্ধ করেছে এই গোষ্ঠীকে।
কতটা শক্তিশালী হিজবুল্লাহ?
ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যেকার সংঘাত যদি শেষ পর্যন্ত পুরোদস্তুর যুদ্ধের দিকে গড়ায়, সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে দেখে নেওয়া যেতে পারে তাদের সামরিক শক্তি আসলে ঠিক কতটা!
কোনো দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনী না হয়েও বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক অস্ত্রসম্ভারে সজ্জিত সামরিক শক্তিগুলোর অন্যতম হল হিজবুল্লাহ। বস্তুত এরকম বাহিনীগুলোর মধ্যে তারাই সবচেয়ে শক্তিশালী, এবং তাদের টাকাপয়সা ও অস্ত্রশস্ত্র জোগায় ইরান।
হিজবুল্লাহর প্রধান শেখ হাসান নাসরুল্লাহ-র দাবি অনুযায়ী তাদের প্রায় এক লাখ যোদ্ধা আছেন। যদিও বিভিন্ন নিরপেক্ষ সূত্রে এই সংখ্যাটা ২০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে বলেও বলা হয়।
হিজবুল্লাহ-র এই সদস্যরা সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তাদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতাও আছে। এদের অনেকেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধেও লড়াই করেছেন।
স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের হিসেব অনুযায়ী, হিজবুল্লাহ-র কাছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার রকেট ও মিসাইল আছে। তাদের এই অস্ত্রভান্ডারের বেশিটাই হল ছোট আকারের, আনগাইডেড ভূমি-থেকে-ভূমি আর্টিলারি রকেট।
তবে হিজবুল্লাহ-র সম্ভারে বিমান ও রণতরী-বিধ্বংসী মিসাইল আছে বলেও ধারণা করা হয়। তা ছাড়া বেশ কিছু ‘গাইডেড’ মিসাইলও আছে, যেগুলো ইসরাইলের অনেক ভেতরে গিয়েও আঘাত হানতে সক্ষম।
গাজা ভূখণ্ডে হামাসের হাতে যে ধরনের অস্ত্রশস্ত্র আছে, তার তুলনায় হিজবুল্লাহ-র এই অস্ত্রভাণ্ডার অনেক বেশি আধুনিক ও বিধ্বংসী।