স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল আসাম, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪৭ পিএম
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গোটা ভারত যখন উত্তাল, ঠিক তখনই আসামে এক স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিজেপি শাসিত রাজ্যটির পুলিশি ব্যবস্থা এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার পদত্যাগের দাবি করলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
শনিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে আসামের এ ঘটনা প্রসঙ্গে একের পর এক টুইট করেন কুণাল ঘোষ। একটি টুইটে তিনি লেখেন, ‘ছাত্রীকে গণধর্ষণ। পুলিশ হেফাজতে অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যু। বাকি নাম ধামাচাপার চেষ্টা? তদন্ত হবে না? আসামের রাত দখল, আসামের জন্য কলকাতায় রাতদখল, প্রবাসী আসামবাসীর বিক্ষোভ, আসামের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি, হবে না? RGKar বিচার আমরাও চাই। কিন্তু সর্বত্র এক প্রতিবাদ হবে না কেন?’
অপর একটি টুইটে কুণাল ঘোষ আরও লেখেন, ‘আসামে গণধর্ষণ। দুষ্কৃতকারীদের রাজনৈতিক মদদের অভিযোগ। একজন গ্রেফতার। তারপর তাকে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে নিয়ে যাওয়ার সময় পুকুরে পড়ে তার মৃত্যু। অভিযোগ, বাকি নাম আর ওপরের মাথাদের পরিচয় গোপন রাখার অপারেশন। সব অভিযোগের তদন্ত, ন্যায়বিচার হবে তো? নাকি পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুতেই শেষ’?
জানা যায়, আসামের নওগাঁ জেলার ধিংয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী তিন দুষ্কৃতকারী তাকে ধর্ষণ করে রাস্তার পাশে পুকুর পাড়ে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে একজনকে আটক করা হয়।
পরে শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেন অভিযুক্ত। দীর্ঘক্ষণ পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশির পর শনিবার সকালে পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার স্বপ্ননীল ডেকা।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য গত রাতে অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় ওই অভিযুক্ত যুবক পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করেন এবং কাছেই একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। পুলিশকর্মীরা তাকে খুঁজতে সঙ্গে সঙ্গে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিলেন। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সহযোগিতায় শনিবার সকালে ওই পুকুর থেকে অভিযুক্তের মরদেহ উদ্ধার হয়।
তবে কীভাবে ওই অভিযুক্ত পুলিশের হেফাজত থেকে পালালেন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং বাকি দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ডাক দিয়েছে স্থানীয়রা। সমাজের নানা স্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ শুক্রবার আসামের নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখান। দোষীদের কঠোর শাস্তি এবং নারীদের সুরক্ষার দাবিতে ফুঁসছেন আসামের মানুষ।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং একে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই রাজ্যের ডিজিপিকে এ ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই মাসে আসামে কেবল নারীদের ওপরেই ২২টি অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস