হানিয়া হত্যাকাণ্ডে ইরানের হুমকি, ‘সর্বোচ্চ সতর্কতায়’ ইসরাইল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৬ পিএম
হিজবুল্লাহর হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের জেরে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। হানিয়াকে হত্যার জেরে ইসরাইলকে ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এমন পরিস্থিতিতে ইরান ও তাদের মিত্রবাহিনীর সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলি সেনারা।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ অবস্থায় রয়েছেন। তবে সামরিক বাহিনী সবদিক থেকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। টাইমস অব ইসরাইল।
দিন দিন খারাপ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। সতর্কাবস্থায় থাকার ব্যাপারে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য আক্রমণ ও প্রতিরক্ষার দিক দিয়ে ইসরাইল উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। আমাদের ওপর যে কোনো দিক দিয়ে যে কোনো আগ্রাসনের উচ্চ মূল্য নেওয়া হবে।
এদিকে ইরান ও তাদের প্রক্সি বাহিনীর হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইলকে সুরক্ষা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। টাইমস অব ইসরাইল বলছে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ বলছে, বাইডেন নেতানিয়াহুকে জানিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ‘ইরানের কাছ থেকে আসা সব ধরনের হুমকি’ থেকে ইসরাইলকে সুরক্ষা দেবে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘অঙ্গীকার’ থেকে বিচ্যুত হবে না। দুই নেতা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে প্রয়োজনে ইসরাইলে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলাপ করেছেন।
এ দুই নেতা এমন সময় কথা বলেছেন যখন ইসরাইলি টেলিভিশন নিশ্চিত করেছে, দেশটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক জোটের মাধ্যমে ইরান ও হিজবুল্লাহর কাছ থেকে আসা সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলা ঠেকানোর কাজ প্রায় চূড়ান্ত করে এনেছে।
বুধবার ভোরে তেহরানে একটি ভবনে হানিয়ার অবস্থান লক্ষ্য করে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া। এ সময় তার এক দেহরক্ষীও নিহত হন। হানিয়া হত্যার জবাবে সরাসরি ইসরাইলে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
এমন প্রেক্ষিতে ইসরাইল সফরে নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করেছে সুইডেন এবং স্লোভেনিয়া। সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের ‘গুরুতর’ নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তারা ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনে ভ্রমণের বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করছে। সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সামাজিকমাধ্যমে এক পোস্টে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এক বিবৃতিতে বলেন, এখন থেকে উভয় দেশে সব ধরনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার স্লোভেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে যে, ইসরাইলের বর্তমান ‘পরিস্থিতির কারণে’ আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে সব ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
অন্যদিকে হানিয়া হত্যাকাণ্ড গাজা যুদ্ধবিরতিতে কোনো কাজে আসবে না বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন, সম্প্রতি ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ড গাজায় যুদ্ধবিরতির সংলাপকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহায়ক হবে কিনা। উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘না, এটি সহায়ক হবে না। বৃহস্পতিবার সকালে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে আমার। তাকেও আমি এ কথাই বলেছি।