ভেনিজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ছবি: যুগান্তর
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। এ নির্বাচনকে ২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আরও ছয় বছরের জন্য ক্ষমতা নিশ্চিত করছে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ২০১৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন তিনি।
নির্বাচনে মাদুরোর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এডমান্ডো গঞ্জালেজ। তিনি সাবেক একজন কূটনীতিক। বিরোধী জোটের সমর্থন নিয়ে সমাজতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করতে চান গঞ্জালেজ।
কয়েক সপ্তাহের জোর প্রচারণা শেষ হয় গত শুক্রবার। দুদিন পর রোববার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচন ভেনিজুয়েলার আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন মতে, ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর জন্য এ নির্বাচন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রাক-নির্বাচনী জরিপগুলোয় দেখা যাচ্ছে, গঞ্জালেসের চেয়ে অনেক পিছিয়ে তিনি। ভেনিজুয়েলার অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের কারণে ভোটাররা মাদুরোর ওপর থেকে সমর্থন সরিয়ে নিচ্ছেন।
ওআরসি কনসুলোটরেসের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে এগিয়ে গঞ্জালেস, যেখানে মাদুরোর সমর্থন মাত্র ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। ডেলফোস ও আন্দ্রেস বেলো ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির আরেক জরিপে দেখা যায়, মাদুরোর পক্ষে রয়েছেন ২৫ শতাংশ ভোটার, যেখানে গঞ্জালেসকে সমর্থন দিয়েছেন প্রায় ৫৯ শতাংশ ভোটার।
মাদুরো যদি সত্যিই নির্বাচনে পরাজিত হন তবে তিনি পরাজয় মেনে নেবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এরই মধ্যে মাদুরো হুমকি দিয়েছেন, তাকে ‘ফ্যাসিবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে এমন বিরোধীদের কাছে হেরে গেলে ‘রক্তপাত’ হবে। যদিও বিরোধীদলীয় প্রার্থী গঞ্জালেস উরুতিয়া দেশের নাগরিকদের ‘ঘৃণার বার্তা দিয়ে ভয় না পাওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাজতান্ত্রিক নেতা মাদুরোর বিরুদ্ধে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করার অভিযোগও রয়েছে। নানা বাধা সত্ত্বেও দেশটির বিরোধী দল শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, যার নেপথ্যে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো।
জ্বালাময়ী বক্তব্যের জন্য সাংবাদিক ও বিশ্লেষকরা মারিয়াকে ভেনিজুয়েলার ‘আয়রন লেডি’ বলতে শুরু করেছেন। মারিয়া প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাদুরোর প্রতিদ্বন্দ্বী না হলেও প্রধান বিরোধী দলের প্রতি গণজোয়ার সৃষ্টির পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছেন। তিনি অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত এবং অভিবাসনে বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোকে পুনরায় একত্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ভেনিজুয়েলায় মাদুরোর দীর্ঘমেয়াদি শাসনের মধ্যে দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক সংকোচন দেখা গেছে। গত কয়েক বছরে সামান্য উন্নতি সত্ত্বেও এখনো লাখ লাখ মানুষের পর্যাপ্ত খাবার ও ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই। ভেনিজুয়েলার জরিপ বলছে, নির্বাচনে যদি দেখা যায় মাদুরো ফের ক্ষমতায় থাকছেন, তবে বিপুলসংখ্যক ভেনিজুয়েলান দেশ ত্যাগ করবে।