ছবি: সংগৃহীত
ইথিওপিয়ায় ভারি বৃষ্টিপাতের পর ভূমিধসে কমপক্ষে ২২৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্য ১৪৮ পুরুষ ও ৮১ জন নারী রয়েছেন।
সোমবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে গোফা জোনের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল কেনচো-শাচা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর আলজাজিরার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার প্রথম দফার ভূমিধস হলে লোকজন আশ্রয়ের জন্য নিরাপদ স্থানের খোঁজে জড়ো হতে থাকে। এ সময় দ্বিতীয় দফায় আবারও ধস হলে এর নিচে চাপা পড়ে অনেকে।
দেশটির স্থানীয় যোগাযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, সোমবার গোফা জোনের কেনচো-শাচা এলাকায় ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৪৮ জন পুরুষ ও ৮১ জন নারী নিহত হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় আঞ্চলিক রাজ্যের প্রতিনিধি আলেমায়েহু বাওদি নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
দেশটির সরকারি মালিকানাধীন ইথিওপিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (ইবিসি) এর আগে জানিয়েছিল, কাদা থেকে পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসক দাগেমাউই আয়েলের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নিহতদের অধিকাংশই ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ির বাসিন্দাদের সাহায্য করতে গিয়েছিল।
ইবিসি দাগেমাউইকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘যারা জীবন রক্ষার কাজে ছুটে এসেছিল তারা এই দুর্যোগে মারা গেছে। এদের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসক, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং কৃষি পেশাজীবীরাও রয়েছে।’
গোফা দেশটির রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার (১৯৯ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।
দেশটির সংসদ সদস্য কামাল হাশি মোহামুদ আদ্দিস আবাবা থেকে আল জাজিরাকে জানান, প্রথমটির কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘লোকজন ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছে এবং তাদের খাবার দিচ্ছে।’
রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যম ফানা ব্রডকাস্টিং করপোরেটের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, মাটি ধসে পড়ার পর স্থানীয় লোকজন হাত দিয়ে মাটি সরিয়ে চাপাপড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘ জানায়, এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে স্বল্প মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটির ওই রাজ্যে বন্যা ও গণবাস্তুচ্যুতের ঘটনা ঘটেছে। বন্যায় বিভিন্ন অঞ্চলের ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এক হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং জীবিকা ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।
ইথিওপিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এর আগেও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছিল।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক জলবায়ু সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের কারণে দেশটির লাখ লাখ মানুষ অপুষ্টির সম্মুখীন হচ্ছে।