পশ্চিমে সম্পর্কোন্নয়ন, যা বললেন ইরানের সংস্কারপন্থি প্রেসিডেন্ট
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
মাসুদ পেজেশকিয়ান, ছবি- রয়টার্স
ইরানের প্রেসিডন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তাকে একজন সংস্কারপন্থি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো দেশটিতে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইরানে এমন সময় নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেজেশকিয়ান দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন যখন গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের টানাপোড়েন চলছে। স্বাভাবিক কারণেই পেজেশকিয়ানের পথচলা সহজ হবে না, বরং ব্যাপক জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাকে। তবে তিনি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার ঘোষণা দিয়েছেন।
জয়ের পর নিজের প্রথম মন্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেছেন, এই নির্বাচন ইরানের জনগণের সঙ্গে ‘অংশীদারিত্বের’ সূচনা।
‘আপনাদের সাহচর্য, সহানুভূতি এবং বিশ্বাস ছাড়া সামনের কঠিন পথটি মসৃণ হবে না। আমি আপনাদের দিকে আমার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি,’ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই বলেছেন পেজেশকিয়ান।
এর আগে মঙ্গলবার তিনি বলেছিলেন, তিনি জিতলে ‘সবার কাছে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন’।
অপরদিকে পরাজিত জলিলি তার সমর্থকদের এখন পেজেশকিয়ানকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
হুরিয়াত ডেইলি জানিয়েছে, জলিলির মঙ্গলবার দেওয়া মন্তব্যটি শনিবার এক্স-এ পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে পরাজয় মেনে নিয়ে জলিলি বলেছেন, ‘জনগণের দ্বারা নির্বাচিত ব্যক্তিকে সম্মান করা ও তার সম্মান বজায় রাখা উচিত এবং এখন আমাদের তাকে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টা করা উচিত।’
৬৯ বছর বয়সি পেজেশকিয়ান একজন হার্ট সার্জন। এর আগে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইরান যাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে সেজন্য তেহরান ও আন্তর্জাতিক শক্তির মধ্যে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে তিনি পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে ‘গঠনমূলক সম্পর্কের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে একতরফাভাবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং ইরানের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যদিও তেহরান দাবি করে আসছে যে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে তারা।
এদিকে ইরানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সোমবার বলেছে যে, পেজেশকিয়ান বা জলিলি- কে জিতেছে সেটা কোনো ব্যাপার না। কারণ তাতে কোনো পার্থক্য হবে না।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে ইরানে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসবে বা দেশটির সরকার মানবাধিকারের প্রতি আরও সম্মান ও নাগরিকদের মর্যাদার ব্যাপারে সোচ্চার হবে- এমনটি আশা করা যায় না।
অবশ্য ইতোমধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার পেজেশকিয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং সম্পর্ক জোরদারের আশা প্রকাশ করেছেন।