জলবায়ুর বিপর্যয়: দেশে দেশে বন্যা, ভোগান্তিতে মানুষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম
ছবি সংগৃহীত
জলবায়ু বিপর্যয়ে বিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা। অত্যধিক তাপপ্রবাহ, অসময়ে বৃষ্টি, ভারি জলোচ্ছ্বাস, ভূমিধস কিংবা বন্যা সব মিলিয়ে বৈশ্বিক আবহওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
এ বছর ভারি বৃষ্টিপাতে দেশে দেশে দেখা দিয়েছে বন্যা। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ভোগান্তিতে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ। বাড়ছে প্রাণহানি, বৃদ্ধি পচ্ছে বাস্তুচ্যুতি, সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে অনেকে। এএফপি, ইউরো নিউজ, এনডিটিভি।
এ বছর বন্যায় বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। গত মাসে বন্যায় ডুবে গেছে সুইজারল্যান্ড ও স্পেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে বন্যার ভয়াবহতা দেখা যায় সুইজারল্যান্ডের পশ্চিমের শহর মর্গেজে। একই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত স্পেনের মাদ্রিদও। তীব্র আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে ফ্রান্স ও জার্মানিতেও। ফ্রান্সে ৪০ থেকে ৭৫ মিমি. বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটেছে।
গত জুন মাসে স্ট্রাসবার্গ থেকে প্যারিস পর্যন্ত রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে ব্যাহত হয়েছিল যোগযোগব্যবস্থা। সেসময় এই অঞ্চলে ২,০০০টিরও বেশি জরুরি কল করা হয়েছিল। জার্মানির সারল্যান্ড অঞ্চলে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। পানির স্তর বৃদ্ধির কারণে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে সেখানে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া গত কয়েক মাস ধরেই বন্যাকবলিত দক্ষিণ এশিয়ার দেশ চীন। দেশটির পূর্বাঞ্চল ও কেন্দ্রের বহু গ্রামের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে দিন পাড় করছে দেশটির কৃষকরা। এরই মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট পুনর্নির্মাণে তৎপর দেশটির সরকার। ৪৫ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করা হয়েছে।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় (এমওএফ) এবং পরিবহণ মন্ত্রণালয় হুবেই, গুয়াংডং, গুয়াংসি, ঝেজিয়াং, ফুজিয়ান, জিয়াংসি, হুনান এবং গুইঝোকে তাদের জরুরি রাস্তা সংস্কারের জন্য ১০৫ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করেছিল। আবার মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে বন্যায় অন্তত হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িতে আটকা পড়েছে এবং বিদ্যুৎ ও ফোনলাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদিকে রাজ্য আবহাওয়া অফিস আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তা দিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া এ তথ্য জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পরিবেশিত খবরে বলা হয়, উত্তর কাচিন রাজ্যের শহর মাইটকিনাতে কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের পর আয়ারওয়াদি নদীর পানি ‘বিপৎসীমার’ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত দুই সপ্তাহে ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তিন লাখের বেশি মানুষ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে একটি আসামে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে ভারতের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী। ব্রহ্মপুত্রের একটি ছোট দ্বীপে চার দিন আটকে থাকার পর মঙ্গলবার ভোরে ১৩ জেলেকে সামরিক হেলিকপ্টারে নিরাপদ স্থানে আনা হয়েছে।