আবহাওয়ার কারণে গাজায় অস্থায়ী সমুদ্রবন্দর ভেঙে ফেলা হয়েছে: পেন্টাগন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি বলেছেন, সাগরের ঢেউ-জোর বাতাসে সমুদ্রবন্দরটি ভেঙে পড়েছে। এই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত অস্থায়ী সাহায্য করা বন্দরটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
শুক্রবার পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিনা সিং সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন সাগরের ঢেউ-জোর বাতাসে বন্দরটি ভেঙে পড়েছে। তাই গাজায় নোঙর করা অবস্থান থেকে অস্থায়ী বন্দরটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্দরটি প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ইসরাইলি বন্দর আশদোদে নিয়ে যাওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পরিষেবা সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য সাময়িকভাবে ঘাটটি স্থানান্তর করা হয়েছে। সাগরের ঢেউ-জোর বাতাসের কারণে সৃষ্ট কাঠামোগত ক্ষতি রোধ করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অস্থায়ীভাবে ঘাটটি স্থানান্তর করা হলেও গাজাবাসীর ভবিষ্যতে সহায়তা প্রদান চলবে।
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অভিযান শুরু হলে সেখানে ত্রাণ পাঠানোয় সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা সমাধানে কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র একটি ভাসমান জেটি নির্মাণ করে।
একদিকে ইসরাইলি বাহিনীর টানা অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণের সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা। এই অবস্থায় গত ৮ মার্চ গাজায় পূর্বদিকে ভূমধ্যসগারের তীরে অস্থায়ী সমুদ্রবন্দর তৈরির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ঘোষণায় তিনি বলেন, প্রস্তাবিত এই বন্দরটি শুধুমাত্র গাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হবে।
বাইডেনের এই ঘোষণার দেড় মাস পর, ২৬ এপ্রিল থেকে গাজার সমুদ্রতীরে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে তার ওপর ভাসমান বন্দর নির্মাণ শুরু করে মার্কিন নৌবাহিনী। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বন্দরের নির্মাণকাজ শেষ হয়। তারপর গত ১৭ মে সেই বন্দরে নোঙ্গর করে প্রথম ত্রাণবাহী মার্কিন জাহাজ।
৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের অস্থায়ী সেই বাঁধটি তৈরি করা হয়েছে ইস্পাতের টুকরো জোড়া দিয়ে। সাগরের ঢেউয়ের কারণে ইস্পাতের বেশ কয়েকটি জোড়া আলগা হয়ে যাওয়ায় ঘটেছে এই বিপত্তি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি এবং গাজায় অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠাণ ফগবো’র অন্যতম অংশীদার মাইক মুলরয় এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, ‘গাজায় বন্দর ফের নির্মাণের ক্ষেত্রে আবহাওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ, এছাড়া অন্যান্য চ্যালেঞ্জও রয়েছে; কিন্তু এসব বাধা-চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব এবং এই মিশন চালিয়ে যাওয়ার জন্যই এগুলো আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, ত্রাণের অভাবে গাজার ফিলিস্তিনিরা এখন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্থায়ী বন্দর ব্যবহার করে গাজায় ত্রাণ পাঠাচ্ছে জাতিসংঘও। বিশ্বের বৃহত্তম এই আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থার খাদ্য সহায়তা বিষয়ক কর্মসূচি ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বন্দরটির মাধ্যমে ৯০০ টন খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছে ডব্লিউএফপি।