‘মুক্ত’ স্বামীকে কাছে পেয়ে যা বললেন অ্যাসাঞ্জপত্নী স্টেলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
লন্ডনের জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর একজন ‘মুক্ত মানুষ’ হিসেবে নিজ জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছেন উইকিলিক্স প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।বুধবার ক্যানবেরা বিমানবন্দরে পা রাখতেই এক আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এসময় অ্যাসাঞ্জ তার স্ত্রী স্টেলাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খান এবং তার বাবাকে জড়িয়ে কেঁদে দেন।
দীর্ঘদিন পর প্রিয়তম স্বামীকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন স্টেলা। বিমানবন্দরেই এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুক্ত হয়ে নিজেকে ফিরে পেতে এবং স্বাধীনতায় অভ্যস্ত হতে জুলিয়ানের কিছু সময়ের প্রয়োজন।’
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ১৪ বছর ধরে মার্কিন আইনজীবীদের সঙ্গে লড়াই করে আসছিলেন। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর মঙ্গলবার আদালতের রায় ঘোষণার মধ্যদিয়ে জেল থেকে মুক্তি পেলেন অ্যাসাঞ্জ।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাক ও আফগানিস্তানে হওয়া সংঘাত সংক্রান্ত পাঁচ লাখ গোপন সামরিক নথি ফাঁস করার অভিযোগ উঠেছিল অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। উইকিলিক্সের তরফে প্রকাশিত ওই গোপন নথিতে থাকা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ২০০৭ সালে ইরাকে মার্কিন হেলিকপ্টার থেকে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে।নিহতদের মধ্যে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকও ছিলেন। এ কারণে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসাঞ্জকে অপরাধীও ঘোষণা করা হয়।
৫২ বছর বয়সি অ্যাসাঞ্জ অবশ্য এদিন ক্যানবেরায় ওই সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেননি। পরিবর্তে তার স্ত্রী ও আইনজীবীরাই তার পক্ষে কথা বলেন। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে স্টেলা বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে তিনি কিসের মধ্য দিয়ে গেছেন। তাই তার যথেষ্ট সময় প্রয়োজন।’
তিনি আরও বনলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমরা এক হয়েছি। আমাদেরকে একটি পরিবার হতে দিন।’এই দম্পতি ২০২২ সালে লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে বিয়ে করেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।
অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে কেবল গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগই নয়, ওঠে যৌন নিগ্রহের অভিযোগও। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে লন্ডনের জেলে বন্দি ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।
এর আগে সুইডেনে তার বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠায় গ্রেফতারি এড়াতে দীর্ঘ সাত বছর লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ বছর নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়ার বাইরে ছিলেন তিনি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে মঙ্গলবার ঘটে গেল এক ‘বিরল’ ঘটনা। তিন ঘণ্টার টানা শুনানিতে নিজের দোষ স্বীকার করে নেন অ্যাসাঞ্জ। তবে তিনি এ-ও মনে করিয়ে দেন যে, সংবিধান অনুযায়ী সবারই বাগস্বাধীনতা আছে।
দোষ স্বীকার করার পর তাকে মুক্তি দেন বিচারক। মূলত তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। তার পরেই যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান অ্যাসাঞ্জ। তথ্যসূত্র: বিবিসি