‘তুরুপের তাস’ নিতীশ কোনদিকে থাকবেন, বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০৭:১০ পিএম
এবার লোকসভা নির্বাচনে ২৪০টি আসন পেয়েছে বিজেপি। এনডিএ জোটের সঙ্গে মিলিয়ে সেই সংখ্যাটা ২৯২-তে দাঁড়াচ্ছে। অর্থাৎ ২৭২-এর ম্যাজিক ফিগার পার করে যাচ্ছে। সরকার গঠনের জন্য কিছুটা হলেও এনডিএ জোটের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বিজেপিকে; যা ২০১৪ সাল এবং ২০১৯ সালে হয়নি। নিজেরাই ২৭২-এর বেশি আসন পেয়ে যাওয়ায় এনডিএ জোট সঙ্গীদের তেমন গুরুত্ব ছিল না। এবার ঠিক উলটো বিষয়টা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এনডিএ জোটে ভাঙন ধরাতে পারলে বিরোধীদের কপাল খুলে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এনকে চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজনীতিতে সবকিছুই হতে পারে। তবে এখনই কিছু বলার মতো সময় আসেননি।
বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এখন প্রশ্ন উঠেছে, নিতীশ কুমার কোনদিকে থাকবেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষক এনকে চৌধুরী বলেন, নিতীশ কুমার আবার একটা সুযোগ পেলেন। তিনি যেদিকে চান, সেদিকে খেলা ঘোরানোর সুযোগ পেয়ে গেলেন। উনি কিভাবে এগিয়ে যান, সেটা সময়ই বলবে। তবে আশপাশে যে জটিলতা আছে, সেটার জন্য তার পক্ষে শিবির পরিবর্তনের কাজটা খুব সহজ হবে না। উনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। ফলে কখন ও কিভাবে নিজের কার্ড খেলতে হবে, সেটা উনি খুব ভালোভাবেই জানেন।
এরই মধ্যে একই বিমানে পাটনা থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ এবং বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। নিতীশের ঠিক পিছনেই বসেন আরজেডি নেতা। তবে দুজনেই কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এর জেরে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক জল্পনা।
এবার লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনের জন্য জোট সঙ্গীদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদিদের। এ কারণেই নিতীশ কুমার, চন্দ্রবাবু নাইডুর মতো নেতাদের ‘দর’ আরও বেড়ে গিয়েছে।
কানাঘুষো শুরু হয়েছে যে তাহলে কি নরেন্দ্র মোদীর এনডিএয়ের ‘বিমান’ ছেড়ে বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের ‘বিমানের’ সওয়ারি হলেন নিতীশ?
যদিও এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন নিতীশের দলের নেতারা। জেডিইউয়ের এক নেতা জানান, এনডিএ জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হলেন নিতীশ। এনডিএ জোটের বৈঠকে যোগ দিতেই দিল্লিতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, জেডিইউয়ের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক কেসি ত্যাগী। জেডিইউ এনডিএতে ছিল এবং এনডিএতে থাকবে।
এদিকে আরজেডির এক নেতাও জানিয়েছেন, দিল্লিতে বিরোধী জোটের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন তেজস্বী। নিতীশের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নেহাতই কাকতলীয়। এদিকে ইন্ডিয়া জোটে নিতীশের প্রত্যাবর্তন নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে আরজেডি।
তিনি বলেন, ২৭২ আসনের ম্যাজিক ফিগারের অনেক আগেই বিজেপিকে আটকে দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়া জোটও খুব একটা পিছিয়ে নেই। বিরোধীদের একই জায়গায় নিয়ে আসার কাজটা শুরু করেছিলেন নিতীশ কুমারই। পরে তিনি চলে গিয়েছেন; কিন্তু উনি সবসময় ফিরে আসতে পারেন।
আরও একধাপ এগিয়ে নিতীশের প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুকে জুড়ে দিয়ে আরজেডির মুখপাত্র মনোজ ঝা বলেন, ওই দুই নেতা সবসময়ই ইন্ডিয়া জোটের কাঠামোর মধ্যে ছিলেন। তাদের যে সামাজিক মতাদর্শ আছে, তা বিজেপির সঙ্গে খাপ খায় না। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নিতীশ কুমারের যে শীতল সম্পর্ক আছে, সেটাও কারও কাছে অজানা নয়।