রায়ে দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্প, বিভক্ত মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪ দফা অভিযোগে নিউ ইয়র্কের আদালত বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও ডেমোক্রেটিক দল মনোনীত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের প্রচারণা বিভাগ বলেছে, নিউ ইয়র্ক জুরির একজন সাবেক প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করার সিদ্ধান্ত দেখিয়ে দিয়েছে যে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।
বাইডেন-কমলা হ্যারিসের নির্বাচনি প্রচারণা বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প সব সময় ভুলবশত বিশ্বাস করে এসেছেন যে, ব্যক্তিগত লাভের জন্য আইন ভাঙলেও তাকে কোনো ফল ভোগ করতে হবে না। কিন্তু আজকের রায় সেই সত্যকেই অপরিবর্তিত রাখল যে, আমেরিকার জনগণ এক সহজ বাস্তবতার মুখোমুখি। ওভাল অফিস থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দূরে সরিয়ে রাখার এখনও একটাই মাত্র পথ রয়েছে আর তা হল, ব্যালট বাক্স।’
অপরদিকে ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি অপমানজনক। দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিতর্কিত বিচারক দিয়ে এই বিচারে কারচুপি করা হয়েছে। এটা একটা কারচুপির বিচার, একটা অসম্মান। তারা আমাদের বিচারের স্থান পরিবর্তন করতে দেবে না। এই এলাকায়, আমাদের অনুপাত ৫ বা ৬ শতাংশ। এটা একটা জালিয়াতি ও অবমাননাকর বিচার।’
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার মাইক জনসন যিনি একজন শীর্ষ পদাধিকারী রিপাবলিকান, তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজকের দিনটা আমেরিকার ইতিহাসে একটা লজ্জার দিন। ডেমোক্র্যাটরা উল্লসিত; কেননা তারা একাধিক হাস্যকর অভিযোগে বিরোধী দলের নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই বিচার একেবারেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, আইনের সঙ্গে এর যোগ নেই।’
কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন, আমেরিকার আইনি ব্যবস্থার শক্তিকেই প্রমাণ করল এই রায়।
সিনেট বিচারবিভাগীয় আদালতের উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ও ডেমোক্রেটিক সিনেটর শেলডন ওয়াইটহাউস বলেন, ‘যে ব্যক্তি ৩৪ দফা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন এবং আইনের শাসনের প্রতি কোনও সম্মান প্রদর্শন করেন না, তিনি বিশ্বের দরবারে এই মহান দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নন।’
ভয়েস অফ আমেরিকা’র প্রতিবেদন বলছে, এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সাবেক প্রেসিডেন্ট অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেন। সে অর্থে এই রায় নজিরবিহীন। তবে এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেবে না। এই রায় দীর্ঘমেয়াদি আপিল প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হবে।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলার সেন্টারের প্রেসিডেন্সিয়াল ওরাল হিস্টরি কর্মসূচির সহ-সভাপতি বারবারা পেরি বলেন, আপিল যদি ব্যর্থ হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো আরেক ঐতিহাসিক নজির হয়ে থাকবেন।
এই রায় যদি বহাল থাকে তাহলে ট্রাম্পকে কারাভোগ করতে হতে পারে বা তাকে গৃহবন্দি করা হতে পারে।
হোয়াইট হাউস কাউন্সেল মুখপাত্র ইয়ান স্যামস বলেন, ‘আমরা আইনের শাসনকে মর্যাদা দেই। এর বাইরে আমাদের কিছু বলার নেই।’
এই রায়ের পর তীব্র হুমকি ও ঝুঁকি সামলাতে তারা প্রস্তুত কিনা, ভয়েস অফ আমেরিকা’র এমন প্রশ্নের জবাব দেয়নি হোয়াইট হাউস।