২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের নটিংহামে গাড়ি মেরামতের কাজ করতেন বারজান মাজিদ
ইউরোপের অন্যতম কুখ্যাত মানবপাচারকারী বারজান মাজিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার সকালে ইরাকের কুর্দিস্তান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
বারজান মাজিদকে নিয়ে সম্প্রতি বিবিসি একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে। এতে বলা হয়, কয়েক বছর ধরে তিনি এবং তার চক্রটি ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ও লরি দিয়ে মানবপাচার ব্যবসার সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন।
কুর্দিস্তানের সুলায়মানিয়া শহরে বারজানের খোঁজ পায় বিবিসি। তিনি স্করপিয়ন নামেও পরিচিত। বারজান বলেন, তিনি কয়েক হাজার অভিবাসীকে ইংলিশ চ্যানেল পার করিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় বারজানের নাম রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিও (এনসিএ) তার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
যুক্তরাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তারা যখন অবৈধ অভিবাসীদের আটক করেন, তখন তাদের মুঠোফোনগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেন। ২০১৬ সালের পর থেকে সন্দেহজনক একটি নম্বরই বারবার সামনে আসছিল। ওই মুঠোফোনগুলোয় নম্বরটি স্করপিয়ন নামে রাখা ছিল। কখনো কখনো একটি কাঁকড়াবিছার ছবি দিয়েও নম্বরটি সেভ করা হয়েছিল।
এই স্করপিয়ন কে, তা আমাদের কাছে খোলাসা করেছিলেন মার্টিন ক্লার্ক নামের যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির একজন জ্যেষ্ঠ তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিনি বলেছিলেন, তদন্তের একপর্যায়ে বোঝা যায়, স্করপিয়ন আসলে বারজান মাজিদ নামের এক কুর্দি ইরাকি।
মাজিদ কিন্তু নিজেই পাচারের শিকার হয়েছিলেন। ২০০৬ সালের ঘটনা। তখন তার বয়স ২০ বছর। একটি লরিতে করে তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়েছিল। তবে এক বছর পর তাকে দেশটি ছেড়ে যেতে বলা হয়। যদিও আরও কয়েক বছর যুক্তরাজ্যে থেকে গিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে কিছু সময় নানা অপরাধে কারাগারে থাকতে হয়েছিল তাকে।
শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালে মাজিদকে ইরাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর কিছু সময় পর মানবপাচারের জগতে পা রাখেন তিনি। স্করপিয়ন নামে তার পরিচিত বাড়ে। ধারণা করা হয়, বড় ভাইয়ের হাত ধরেই এ অপরাধে জড়িয়েছিলেন তিনি। তার বড় ভাই তখন বেলজিয়ামের কারাগারে সাজা খাটছিলেন।