Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া হামাসের

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া হামাসের

দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম আল-কুদস শনিবার জানিয়েছে, ইসরাইলের সঙ্গে জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকরে রাজি হয়েছেন হামাস নেতারা।

সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আশফাকও জানিয়েছে, জিম্মি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দুপক্ষ (হামাস-ইসরাইল)। হামাস এ ব্যাপারে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘোষণা দেবে। 

যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র আল-কুদসকে জানিয়েছে, হামাসসহ অন্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্রগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত জোট আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

সূত্র জানিয়েছে, বিগত কয়েক ঘণ্টায় মিসর, কাতার, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলি আলোচকরা ঘন ঘন বৈঠক করেছেন এবং ইসরাইলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের অনুপাত কেমন হবে সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন। 

এ বিষয়ে মিসরীয় টিভি চ্যানেল কানাতুস শারক্বি এক প্রতিবেদনে বলেছে, হামাস স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছে। মার্কিন আশ্বাস এবং প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়া অনুসারে চুক্তির তৃতীয় ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে এবং এর অর্থ ইসরাইলি সেনাবাহিনী আর গাজায় ফিরে আসবে না। 

এদিকে কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তির বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে কাতারের প্রতিনিধিদল শনিবার কায়রোর উদ্দেশে রওয়ানা করেছে। হামাসের প্রতিনিধিদলও একই দিনে কায়রো পৌঁছেছে। তবে তারা আলাদাভাবে অথবা মিলিতভাবে বৈঠক করবেন কিনা সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরীয় কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বর্তমানে যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে তা হামাসের জন্য মেনে নেওয়া খুবই সহজ এবং এ প্রস্তাব হামাসের মেনে নেওয়া উচিত। এরই মধ্যে হামাসের এমন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেল। 

আল-কুদসকে হামাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহার করা ছাড়াই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে রাজি হয়েছেন তারা। এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে শুধু নারী, বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থদের ছাড়া হবে। তাদের ছাড়ার পরও বেশ কয়েকজন ইসরাইলি সেনা তাদের কাছে থেকে যাবে। এ বিষয়টি কাজে লাগিয়ে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হবেন তারা। 

এছাড়াও ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে নিশ্চয়তা দিয়েছে জিম্মি ও যুদ্ধবিরতির তৃতীয় ধাপ শেষে গাজা থেকে সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে অন্য আরেকটি ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম কান নিউজ জানিয়েছে, আরব সংবাদমাধ্যমগুলোতে যুদ্ধবিরতি এবং সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন ইসরাইলি কর্মকর্তারা।

বর্তমানে যে জিম্মি ও যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে সেটিকে তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হবে ৪০ দিন। এই সময়ে হামাস ৩৩ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরাইল কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে। দ্বিতীয় ধাপের মেয়াদ হবে ৪২ দিন। 

এই ধাপে বাকি জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। একই সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপে গাজায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে। তৃতীয় ধাপেরও মেয়াদ হবে ৪২ দিন। এ সময়টায় হামাস মৃত জিম্মিদের মরদেহ ইসরাইলের কাছে বুঝিয়ে দেবে। সংবাদমাধ্যম আল-কুদস জানিয়েছে, হামাসের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই সপ্তাহের মধ্যেই দুপক্ষ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।

ইসরাইলি কারাগারে ফিলিস্তিনি চিকিৎসকের মৃত্যু

ইসরাইলি কারাগারে ফিলিস্তিনি এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ছিলেন। শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত আদনান আল-বুর্শ (৫০) গাজার আল-শিফা হাসপাতালের অর্থোপেডিক্সের প্রধান ছিলেন। 

জানুয়ারিতে উত্তর গাজার আল-আওদা হাসপাতালে খণ্ডকালীন চিকিৎসক হিসাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনী তাকে আটক করে নিয়ে যায়। ইসরাইলি জেল পরিষেবাও নিশ্চিত করেছে, ১৯ এপ্রিল ইসরাইলের ওফার কারাগারে মারা যান ডা. আল-বুর্শ। ফিলিস্তিনি এ চিকিৎসকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তার সহকর্মীরা। 

তারা জানিয়েছেন, গাজার এ কঠিনতম সময়ে তিনি বীরত্ব এবং ভালোবাসা দিয়ে মানুষের সেবা করে গেছেন। তাদের জন্য এই মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। এদিকে পশ্চিম তীর এবং গাজায় মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ বলেছেন, ডা. আল-বুর্শের মৃত্যুর খবরে আমরা ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষার জন্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এখন পর্যন্ত আল-বুর্শের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। ফিলিস্তিনি বন্দিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, চিকিৎসক আল-বুর্শের মৃত্যু একটি হত্যা। তার মরদেহ এখনও ইসরাইলি হেফাজতে রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম