Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

৬ মাসে হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক কতটা ধ্বংস হয়েছে?

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৮ এএম

৬ মাসে হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক কতটা ধ্বংস হয়েছে?

গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার শিকার হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র এই সংগঠনটিকে ‘গুঁড়িয়ে দেওয়ার এবং নিশ্চিহ্ন করে ফেলার’ প্রতিজ্ঞা নিয়ে গাজার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ইসরাইল। 

যাতে হামাস আর কোনো দিন দেশটির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে। গাজায় ইসরাইলের সেই অভিযানের ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। এ ছয় মাসে ৩৩ হাজারের বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। 

গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের সবাই বাস্তুচ্যুত, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এবং ছোট্ট এই ভূখণ্ডটিতে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।

ইসরাইলের দাবি, তাদের অভিযানে হাজার হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে তারা গাজায় হামাসের ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কের বেশির ভাগটাই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছে। এই সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেই সবার চোখের আড়ালে হামলা চালাতো হামাস।

হামাসকে নির্মূল করার অংশ হিসাবে, ইসরাইল গাজার নীচে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির বিস্তৃত টানেলের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যা তারা পণ্য আনা নেওয়া এবং মানুষদের সরানোর কাজে ব্যবহার করতো।

আইডিএফ-এর মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস অক্টোবরে বলেছিলেন, গাজা উপত্যকাকে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য একটি স্তর এবং তারপরে হামাসের জন্য আরেকটি স্তর হিসাবে ভাবুন। হামাস যে দ্বিতীয় স্তরটি তৈরি করেছে আমরা সেই দ্বিতীয় স্তরে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

হামাস পূর্বে বলেছে যে, তার টানেল নেটওয়ার্ক ৫০০ কিলোমিটার (৩১১ মাইল) প্রসারিত, যদিও স্বাধীনভাবে এটি যাচাই করার কোন উপায় নেই।

বিবিসি আইডিএফ কে জিজ্ঞাসা করেছে যে কয়টি টানেল আছে এবং মোট টানেল নেটওয়ার্কের কতোটা তারা তারা ধ্বংস করেছে।

এর উত্তরে, তারা বলেছে যে তাদের বাহিনী গাজায় সন্ত্রাসী অবকাঠামোর একটি বড় অংশ ধ্বংস করেছে। 

আইডিএফ মাঝে মাঝে হামাসের সুড়ঙ্গে ঢুকে প্রমাণ দেখিয়েছে যে তারা এমন অনেক সুড়ঙ্গ খুঁজে বের করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, নভেম্বরে, আইডিএফ গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের নীচে একটি টানেল নেটওয়ার্কের অংশের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। তারা দাবি করছে যে এই স্থানটি হামাস তাদের কমান্ড সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করতো।

ইসরাইলি বাহিনী কতোটা সুড়ঙ্গের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে এর পুরো নেটওয়ার্কের পরিধি নির্ধারণের চেষ্টা করেছে বিবিসি ভেরিফাই।

এজন্য ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২৬শ মার্চ ২০২৪ সালের মধ্যে গাজার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে রেফারেন্সিং টানেল নিয়ে আইডিএফ এর সমস্ত বার্তা পর্যালোচনা করেছে।

এর মধ্যে ১৯৮টি বার্তায় সুড়ঙ্গ খুঁজে পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি তারা টানেল এবং টানেল শ্যাফট অর্থাৎ টানেলের বাইরের মুখের সন্ধান পেয়েছে।

আরও ১৪১টি বার্তায় দাবি করা হয়েছে যে আইডিএফ একটি টানেল ধ্বংস বা গুড়িয়ে ফেলেছে।

তাদের বেশিরভাগই সুনির্দিষ্ট বিশদ বিবরণ বা নির্দিষ্ট অবস্থান দেয়নি। তাই আইডিএফ যে নেটওয়ার্কটি উন্মোচিত করেছে বা ধ্বংস করেছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।

গাজার মাটির নিচের গোলকধাঁধার বেশ কয়েকটি অংশ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সুড়ঙ্গের রুট এবং বিভিন্ন আকারের কক্ষ, সেইসাথে সুড়ঙ্গের যে অংশটি পৃষ্ঠের সাথে মিলিত হয়েছে- একে টানেল শ্যাফট বলা হয়।

বিবিসি ভেরিফাই যে বার্তাগুলো বিশ্লেষণ করেছে তার মধ্যে ৩৬টি হামলায় চারশটিরও বেশি টানেল শ্যাফটের ধ্বংস করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

যাইহোক, পুরো সুড়ঙ্গের সঙ্গে একটি শ্যাফটকে তুলনা করাটা বিভ্রান্তিকর হবে জানিয়েছেন, ড. ড্যাফনে রিচমন্ড-বারাক। তিনি ভূগর্ভস্থ যুদ্ধের বিশেষজ্ঞ যিনি ইসরাইলের রেইচম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

তার মতে, টানেল শ্যাফট গুড়িয়ে দিলেও এর ভেতরে সুড়ঙ্গের নেটওয়ার্কটি অক্ষত থাকে। আমি মনে করি না যে আমরা এই যুদ্ধে সুড়ঙ্গগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হতে দেখেছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম