ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ায় ২৫ বছর ক্ষমতায় রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি নির্বাচনেও পুতিনের জয় নিশ্চিতই বলা যায়। পঞ্চমবারের মতো তিনিই ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছেন।
শুক্রবার ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর পঞ্চমবার প্রেসিডেন্টের আসনে বসবেন পুতিন। অর্থাৎ ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন তিনি। যারা পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তারাও পুতিনের তেমন সমালোচনা করছেন না। ফলে অনেকেই বলছেন, এই নির্বাচন আসলে লোকদেখানো।
কিছু দিন আগেই রাশিয়ার জেলে মৃত্যু হয় পুতিনবিরোধী নেতা নাভালনির। অভিযোগ উঠেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেও তাকে বিষ দিয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। জার্মানিতে তাঁ চিকিৎসা হয়েছিল। পুতিনের আরেক সমালোচক বরিস নাদেঝদিন। কিন্তু রাশিয়ার আদালত তাকে ভোটে দাঁড়াতে দেননি। সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন বরিস; কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও তাকে ভোটে দাঁড়ানোর অনুমতি দেননি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বরিস দাঁড়ালে পুতিনকে লড়াইয়ের মুখে ফেলতে পারতেন।
পুতিনের বিরোধী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন ৭৫ বছরের কমিউনিস্ট প্রার্থী নিকোলাই খারিতোনভ। এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের জরিপে জনপ্রিয়তার বিচারে দ্বিতীয় স্থানে আছেন তিনি। তবে পুতিনের সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান থাকে অনেক হবে বলেই অনুমান। স্থানীয় কিছু বিষয়ে পুতিনের বিরোধিতা করলেও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ৪০ বছরের ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভ পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর বিশেষ কোনো মতপার্থক্য নেই। শুধু ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে ভোটের প্রচারে কথা বলেছেন তিনি। দাভানকোভ রাশিয়ার আইনসভা স্টেট ডুমার ডেপুটি চেয়ারম্যান।
সমীক্ষা বলছে, নিকোলাই ও ভ্লাদিস্লাভ যৌথভাবে বড়জোর ৪ থেকে ৫ শতাংশ ভোট পেতে পারেন। বাকি ভোটের পুরোটাই পাবেন পুতিন। রাজনৈতিক মহলে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই লোকদেখানো নির্বাচনের আদৌ কি কোনো প্রয়োজন ছিল?
তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই ভোট থেকে দেশের ভেতরে ও বাইরে দুটি বিষয় প্রমাণ করতে চাইছেন পুতিন। দেশের ভেতর তিনি দেখাতে চাইছেন রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ তাঁর সঙ্গে আছেন। অর্থাৎ প্রেসিডেন্টকে নিয়ে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ।
দেশের বাইরে পুতিন এই ভোটের মাধ্যমে বোঝাতে চাইছেন, তার নেওয়া সব সিদ্ধান্ত দেশের মানুষ সমর্থন করছেন। অর্থাৎ, ইউক্রেন অভিযান নিয়ে দেশের ভেতরে কোনো বিরোধিতা নেই। বহির্বিশ্বে বার্তাটি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি ছিল বলেই মনে করেন পুতিন বিশেষজ্ঞরা।