ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই বিতর্কিত সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর করল ভারত। সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এ আইন অনুযায়ী, মুসলমান ছাড়া সব ধর্মের লোকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন (সিএএ) মুসলিম বিরোধী নয়।
বার্তা সংস্থা এএনআই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, বিভিন্ন প্লাটফর্মে কমপক্ষে ৪১ বার আমি সিএএ নিয়ে কথা বলেছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছি। আমি বলেছি, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভীত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, কোনো নাগরিকের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মতো বিধান এতে নেই।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগে যেসব বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও আফগান হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি এবং খ্রিষ্টান ভারতে পৌঁছেছেন সেইসব নির্যাতিত অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য এই আইন। দেশের সংবিধানের আইনের অধীনে ভারতের নাগরিকত্ব দাবি করে আবেদন করার অধিকার আছে মুসলিমদেরও। কিন্তু এই আইনটি (সিএএ) করা হয়েছে ওই দেশগুলোতে নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য।
সিএএ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর অবস্থান নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন অমিত শাহ। বলেন, সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে না এই আইন। এ বিষয়ে পরিষ্কার, যৌক্তিক ব্যাখ্যা আছে। দেশভাগের কারণে যারা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে থেকে গিয়েছিলেন এবং ধর্মীয় নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তারপর ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এই আইন তাদের জন্য।
সিএএ বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরুর পর সরকার কি এই আইন বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে? জবাবে অমিত শাহ বলেন, সিএএ’কে আর কখনো পিছনে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, মে মাসে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ভারত সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর করল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯ সালে আইনটি পাস করে। বিতর্কিত আইনটি ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্বের অনুমতি দেয়।
এ আইন অনুযায়ী, মুসলমান ছাড়া সব ধর্মের লোকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ভারতের প্রতিবেশী আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিসগড়, হরিয়ানা, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে বসবাসকারী অ-মুসলিমদের (হিন্দু, শিখ, জৈন এবং বৌদ্ধ) ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এমনটাই জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে মুসলমান ছাড়া অন্য সবাই যাতে অবিলম্বে আবেদন করেন, সেই আমন্ত্রণবার্তাও দেওয়া হয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।