রাখাইনে আরেক ঘাঁটি হারাল জান্তা। বৃহস্পতিবার এ রাজ্যের পোন্নাগিউন শহরে জান্তা নিয়ন্ত্রিত পুলিশের মায়োমা ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। শহর থেকে শুরু করে ঘাঁটিসহ রাখাইনের সদর দপ্তর, সবই হারাতে বসেছে জান্তা। বিদ্রোহীদের অভিযানে একবারে নুয়ে পড়েছে।
ফুরিয়ে আসছে ক্ষমতার মেয়াদও। শিগগিরই জান্তামুক্ত হবে রাখাইন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রীতিমতো এমন ঘোষণাও দিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। সে হিসাবে রাখাইনে জান্তাদের মেয়াদ আর মাত্র তিন দিন! নারিনজারা নিউজ, দ্য ইরাবতী।
বর্তমানে আরাকান যোদ্ধারা রাখাইনের ৫৫০তম হালকা পদাতিক ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে কৌশলগত যুদ্ধে নিযুক্ত রয়েছে। রাজধানী সিতওয়ে শহর থেকে ২১ মাইল দূরে অবস্থিত পোন্নাগিউনের একমাত্র ব্যাটালিয়ন। আরাকান আর্মির একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যোদ্ধারা রাখাইন রাজ্যের রাথেদাউং, বুথিডাং, মংডু এবং পোন্নাগিউন টাউনশিপে সামরিক ক্যাম্প, কৌশলগত অপারেশন কমান্ড ঘাঁটি, ব্যাটালিয়ন এবং ডিভিশন সদর দপ্তরের বিরুদ্ধে কৌশলগত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জান্তা ক্যাম্প সম্পূর্ণ দখল করার জন্য অবিরাম আক্রমণ করছে।
যোদ্ধারা মিনবিয়া টাউনশিপের অধীনে কান্নি গ্রামের কাছে ৯ নম্বর অ্যাডভান্স ট্রেনিং স্কুলের বিরুদ্ধেও লড়াই করছে। আরাকান আর্মির যোদ্ধারা বিভিন্ন অপারেশনাল লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। অবশিষ্ট শিবিরগুলো দখল করার প্রচেষ্টা বজায় রেখেছে।
এদিকে শুক্রবার বিকাল ৫টার (স্থানীয় সময়) দিকে জান্তা জেট ফাইটার এবং ওয়াই ১২ বিমান ব্যবহার করে রাখাইনের রামরি এলাকায় বিমান হামলা চালায়। এরপর রাত ৯টার দিকে (স্থানীয় সময়) রামরি শহরে পাইন চাউং গি গ্রামের কাছে কালাইন তাউং নদীতে বিদ্রোহী যোদ্ধা এবং সেনা বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ গুলি বিনিময় হয়।
এ সময় আরাকান আর্মি শক্তিবৃদ্ধি বহনকারী জান্তার নৌবাহিনীর বার্জে আক্রমণ শুরু করে। ধোঁয়া নির্গত আর্টিলারি শেল দিয়ে বার্জটিতে আঘাত করায় এটি পিছু হটে। সংঘর্ষের সময় জান্তা ওয়াই-১২ সামরিক বিমান দিয়ে বিমান হামলা চালায়।
বারবার রামরি শহরকে ধ্বংস করার চেষ্টায় বোমা বর্ষণ করে। আরাকান আর্মির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এক ঘণ্টার তীব্র লড়াইয়ের পর বিদ্রোহীদের আর্টিলারি শেল দিয়ে আঘাত হানায় নৌবাহিনীর বার্জটি ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করে এবং অবশেষে পিছু হটে।
এএ একটি বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে, ৭ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে ছয় দিনের নৌযুদ্ধের সময়কালে এ যোদ্ধারা মোট পাঁচটি সামরিক জাহাজ (দুটি বার্জ সমন্বিত) ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। অতিরিক্ত আরও চারটি সামরিক জাহাজ এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যেগুলো আর কখনই ব্যবহার করা যাবে না।