ভারতে ৯০ বছরের পুরনো মুসলিম আইন বাতিল
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম
ফাইল ছবি
ভারতের আসাম রাজ্যে প্রায় ৯০ বছরের পুরনো মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুক্রবার এই সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। তার মানে, এখন থেকে মুসলিমদের বিয়েও স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় নথিভুক্ত করতে হবে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এর মাধ্যমে আসামের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্যটিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। আর এমন সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো যখন স্বাধীনতার পর ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি পাশ করিয়ে নিয়েছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার।
সেই রেশ ধরেই শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আসামের পর্যটনমন্ত্রী জয়ন্ত মল্লবড়ুয়া বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করবে তার সরকার। আর ১৯৩৫ সালের মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইন বাতিল করে দিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, আজকের সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে আসামে আর মুসলিমদের বিয়ে এবং ডিভোর্সের বিষয়টি এই আইনের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা যাবে না। আমাদের ইতোমধ্যে একটি স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট আছে। আমরা চাই, সেই আইনের আওতায় সব বিয়ে নথিভুক্ত হোক।
তার দাবি, ১৯৩৫ সালের মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইনের আওতায় আইনিভাবে সিদ্ধ বিয়ের বয়সের আগেই তরুণ ও তরুণীদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। ফলে রাজ্যে বাড়ছিল বাল্যবিবাহের সংখ্যা। সেটাই বিবেচনা করে ১৯৩৫ সালের মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইন বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আসামের পর্যটনমন্ত্রী বলেন, আজকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বাল্যবিবাহের সংখ্যা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে।
এদিকে এতদিন রাজ্যটিতে ৯৪ জন নথিভুক্ত ব্যক্তি ১৯৩৫ সালের আইনের আওতায় মুসলিমদের বিয়ে ও ডিভোর্স নথিভুক্ত করতেন। কিন্তু নতুন আইনের ফলে তাদের সেই ক্ষমতা থাকবে না। অর্থাৎ তারা চাকরি হারাবেন।
এ বিষয়ে আসামের পর্যটনমন্ত্রী জানিয়েছেন, যে ৯৪ জন মুসলিমদের বিয়ে ও ডিভোর্স নথিভুক্ত করতেন, তাদের বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। যেহেতু তারা বিয়ে ও ডিভোর্স নথিভুক্ত করে জীবন নির্বাহ করতেন, তাই মাথাপিছু তাদের এককালীন দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।