Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে তুমুল লড়াই, কাওলিন শহর ঘিরে ফেলেছে জান্তা

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫২ পিএম

মিয়ানমারে তুমুল লড়াই, কাওলিন শহর ঘিরে ফেলেছে জান্তা

কামান-ড্রোনের ভয়াবহ শব্দে আবারও উত্তপ্ত মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাগাইং অঞ্চল। চারদিকে সেনাবাহিনী টহল। মাথার ওপর চক্কর কাটছে বিমান। হারানো শহর ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সেনারা। 

রক্তক্ষয়ী বিমান হামলা চালিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে এ অঞ্চলের শহরের দিকে। ইতোমধ্যেই সাগাইংয়ের অন্যতম শহর কাওলিন ঘিরে ফেলেছে জান্তা। বুধবার ইরাবতির খবরে বলা হয়েছে, সেনাদের ছয়টি দল দুই দিক থেকে এ শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। 

বেসামরিক ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) কাছ থেকে শহরটি পুনরুদ্ধার করতে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে সেনারা। কান্তবালু এবং কিয়ুনলা টাউনশিপের সেনারা দক্ষিণ থেকে কাওলিন আক্রমণ করছে। উন্টো টাউনশিপের সেনারা উত্তর দিক থেকে অগ্রসর হচ্ছে। পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)সহ কাওলিন, পিনলেবু ও উন্টো প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো শহরটিকে রক্ষা করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

সেনা এবং পিডিএফ বাহিনীর লড়াই তীব্র হয়ে উঠেছে। পিডিএফ বাহিনী গত বছরের ৬ নভেম্বর জান্তার কাছ থেকে কাওলিন দখলে নেয়। মিয়ানমারের প্রতিরোধ বাহিনীর দখলকৃত প্রথম জেলা পর্যায়ের শহর এটি। সেই শহর আবারও পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জান্তা। একের পর এক বিমান হামলায় গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সবকিছু। জ্বালিয়ে দিচ্ছে আশপাশের গ্রামগুলোও। 

কান্তবালুর একজন পিডিএফ যোদ্ধা দ্য ইরাবতিকে জানিয়েছেন, জান্তা সেনারা শহরের কাছাকাছি আসছে। পরিকল্পিত হামলার খবর পাওয়ার পর থেকে বিদ্রোহী বাহিনী শহরটিকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছে। 

রোববার সন্ধ্যার পর থেকে সেনারা শহরের দক্ষিণে কোয়েহতাউংবো গ্রাম এবং উত্তরে উন্টো হয়ে কাওলিনে প্রবেশের চেষ্টা করছে। কাওলিন পিডিএফ যোদ্ধা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সেনারা চারটি বোমা হামলা চালায়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দক্ষিণ দিক থেকে অগ্রসর হওয়া জান্তা সেনারা জিকন গ্রামে আগুন দিয়েছে বলে জানা গেছে।

কাউলিন ইনফো অনুসারে, সেনারা কামান এবং ড্রোন ব্যবহার করছে। যোদ্ধারাও পালটা হামলা চালিয়েছে। এটি কাওলিনের সবচেয়ে ভয়ংকর লড়াই ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। আরও বলেছেন, জান্তা সেনারা বিমান সহায়তা ছাড়া অগ্রসর হওয়ার সাহস পায় না। 

জান্তা সমর্থনকারী টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো দাবি করেছে, মঙ্গলবার সকালে শাসক বাহিনী কাওলিন টাউনশিপের কয়েকটি পিডিএফ ফাঁড়ি দখল করেছে। কান্তবালুতেও ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এটি কান্তবালুর সাঁজোয়া ব্যাটালিয়ন ৬০০৬-এ সেনা, অস্ত্র এবং সরবরাহ পরিবহণের জন্য হেলিকপ্টার এবং ট্রাক ব্যবহার করে। 

কান্তবালু কাওলিন শহর থেকে ৬৪ কিলোমিটার দক্ষিণে। এর বাসিন্দারা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে আশপাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে এবং ম্যাগওয়ে, মান্দালয় ও তানিনথারি অঞ্চলেও ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটছে।

আরও পড়ুন>> মিয়ানমারের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব এত বেশি কেন?

পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন (ইএও’স) সারা দেশে শাসকদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বাড়িয়েছে। বুধবার ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জান্তা গত তিন দিনে দুটি সামরিক ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর, বেশ কয়েকজন সেনা এবং আরও চারটি ঘাঁটি হারিয়েছে। 

এদিকে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্ব কারেনি রাজ্যের দাও সি ই গ্রামের একটি স্কুলে বিমান হামলায় চার শিশু নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পাঁচজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, তাদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে ছিল। মাথা ও পেটে আহত দুই শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

যদিও সামরিক বাহিনী এখনো সোমবারের বিমান হামলার বিষয়ে কোনো বিবৃতি জারি করেনি। তবে অতীতেও তারা স্কুল, চিকিৎসা সুবিধা এবং ধর্মীয় ভবনসহ বেসামরিক এলাকা এবং অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। জান্তা-অনুষঙ্গী মিডিয়া আউটলেটগুলো গ্রামে বিমান হামলার খবর মিথ্যা বলে দাবি করেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম