বিজেপির চাপে মাথা নোয়াবেন না কেজরিওয়াল
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৭ পিএম
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, শত চাপের মুখেও মাথা নোয়াবেন না। কারণ তিনি কোনো অপরাধ করেননি।
গ্রেফতারের শঙ্কা নিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, বিজেপির সঙ্গে সন্ধি করলে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে। সেজন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে; কিন্তু শত চাপের মুখেও তিনি মাথা নোয়াবেন না।
আবগারি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) কেজরিওয়ালকে পাঁচবার সমন জারি করেছে। ওই সমন ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে তিনি সাড়া দেননি। বারবার সমন এড়ানোর প্রতিকারের আশায় ইডি দিল্লির আদালতে আবেদন জানিয়েছে।
আগামী বুধবার তার শুনানি হওয়ার কথা। কেজরিওয়াল ও আম আদমি পার্টির (আপ) শীর্ষ নেতাদের দৃঢ় ধারণা, ইডি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে তাকে গ্রেফতারের জন্য।
আবগারি মামলায় তদন্তের জন্য ইডি আগেই গ্রেফতার করেছে ‘আপ’-এর দুই শীর্ষ নেতা মণীশ সিসোদিয়া ও সঞ্জয় সিংকে। অনেক দিন হলো দুজনের কেউই জামিন পাননি। কেজরিওয়ালকেও এর আগে সিবিআই দীর্ঘ সময় জেরা করেছে। এখন জেরা করতে সমন জারি করে চলেছে ইডি। সেই উদ্যোগ শুরু হওয়ামাত্র দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি চাইছে তাকে জেলে ঢোকাতে। সেজন্য এত তৎপরতা।
তাকে জেলে ঢোকানোর জন্য বিজেপির ছক নিয়ে কেজরিওয়াল কিছুদিন আগে বলেছিলেন, ওরা চাইছে আপ ভাঙিয়ে দিল্লি সরকার দখল করতে। সে জন্য বিজেপি আপের সাতজন বিধায়ককে টার্গেট করেছে। প্রত্যেককে ২৫ কোটি রুপি দেওয়ার টোপ দিয়েছে। দিল্লি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী আতিশীও সেই অভিযোগে গলা মিলিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দিল্লি পুলিশ হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা কেজরিওয়াল ও আতিশীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে চাইছে।
গত রোববার দিল্লি পুলিশের একটি দল আতিশীর বাসভবনে যায়; কিন্তু সে সময় তিনি সেখানে ছিলেন না। তিনি দিল্লিতে এক স্কুলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালও উপস্থিত ছিলেন।
ওই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপিতে যাতে তিনি যোগ দেন বা ওদের সঙ্গে হাত মেলান, তা হলে নাকি তার ‘সাত খুন মাফ’ হয়ে যাবে। সব অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে।
বিজেপির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের রাস্তা দেশের শাসক দলই কিন্তু প্রস্তুত করে দিয়েছে। বিরোধী দল ভেঙে সরকার গড়তে তারা ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের’ দলে টেনেছে। মহারাষ্ট্রে যাদের বিরুদ্ধে খোদ প্রধানমন্ত্রী ৭০ হাজার কোটি রুপির দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন, যাদের একমাত্র স্থান জেলখানা বলে জাহির করেছিলেন, তাদের দলত্যাগ করিয়ে ওই রাজ্যে তারা সরকার গড়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির সব তদন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের যেসব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল, তাদের কেউ কেউ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
আপাতত সবার নজর বুধবারের দিকে। আদালতকে দিয়ে ইডিতে হাজিরা দেওয়া নিশ্চিত করা গেলে কেজরিওয়ালের গ্রেফতার অবধারিত বলে বিজেপি মনে করছে। একই শঙ্কা আম আদমি পার্টিরও। লোকসভা ভোটের আগেই কেজরিওয়ালকে জেলে ঢোকাতে তৎপর বিজেপি।
দিল্লিতে লোকসভার আসন সাতটি। গত ভোটে সব আসনই পেয়েছিল বিজেপি। এবার সমঝোতা করে ভোটে লড়ার আগ্রহ আপ ও কংগ্রেস দুই দলেরই। বিজেপি কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না।