Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

হাসপাতালের ‘বেজমেন্টে’ তল্লাশি ইসরাইলি বাহিনীর

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪৪ পিএম

হাসপাতালের ‘বেজমেন্টে’ তল্লাশি ইসরাইলি বাহিনীর

গাজায় বর্তমানে ইসরাইলিদের মূল টার্গেট হাসপাতালগুলো। টানা ৪০ দিনের হামলায় গাজার বেশিরভাগ হাসপাতালই অচল। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি ও আক্রমণের শিকার গাজার সর্ববৃহৎ আল-শিফা হাসপাতাল। এতদিন হাসপাতালটির বাইরে থেকে হামলা চালালেও এবার হাসপাতালের ভেতর ঢুকে পড়েছে ইসরাইলি বাহিনী। রীতিমতো ‘বেজমেন্টে’ তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। 

আল-শিফা হাসপাতালে হামাসের সদর দপ্তরের সন্ধানে আকস্মিক এ পদক্ষেপ নেয় ইসরাইলি বাহিনী। 

বুধবার ভোরে আল-শিফা হাসপাতালে প্রবেশ করে সৈন্যরা। রাতারাতি হামলায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে হাসপাতালের চারদিকে। খবর দ্য গার্ডিয়ান, আলজাজিরা, স্কাই নিউজের। 

আকস্মিক হামলার কয়েক ঘণ্টা পর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, ‘দখলদার সেনাবাহিনী পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবেশ করেছে। এখন বেজমেন্টে রয়েছে এবং বেজমেন্টে অনুসন্ধান করছে। তারা কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করেছে, গুলি এবং বোমা হামলা চালাচ্ছে। আমরা যেখানে আছি সেখানে বড় ধরনের বিস্ফোরণ এবং ধুলো ঢুকেছে। হাসপাতালের ভেতরেও একটি বিস্ফোরণ ঘটছে।’ 
রাতারাতি হামলার ছবি ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আইডিএফ থেকে পোস্ট করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা ছবিতে তারা লিখেছেন, ‘সুনির্দিষ্ট এবং টার্গেটেড অপারেশন এখনও চলছে। এমনকি হাসপাতালে ইনকিউবেটর, শিশুর খাদ্য এবং চিকিৎসা সরবরাহ পৌঁছে দিয়েছে বলেও দাবি করেন ইসরাইলি বাহিনী। 

হাসপাতালে আকস্মিক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রকে পুরোপুরি দোষারোপ করছে গাজার রাজনৈতিক বাহিনী হামাস। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনেই এ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনের বিপরীতে এ হামলাকে স্বাস্থ্য সুবিধার বিরুদ্ধে ‘নৃশংস অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেন তারা। এছাড়াও হাসপাতালটিতে মানবিক সংকটের বিষয়টিও তুলে ধরেন। 

শিফা হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ হামলায় রোগী, আশ্রয়প্রার্থী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ইউসুফ আবু রিশ বলেছেন, তিনি কমপ্লেক্সের ‘জরুরি বিভাগে ভেতরে কয়েক ডজন সৈন্য ও কমান্ডো’কে দেখতে পেয়েছেন। 

হাসপাতালের অভ্যন্তরে থাকা ডাক্তার আহমেদ এল মোখাল্লাতি বলেন, ‘কম্পাউন্ডের বাইরে গুলির শব্দে কর্মীদের জানালা থেকে সরে আসতে বলা হয়। বোমাবাজি। হাসপাতালের চারপাশে এবং হাসপাতালের মধ্যে গুলি। এটা সত্যিই ভয়ংকর... এবং তারপরে আমরা বুঝতে পারি যে ট্যাংকগুলো হাসপাতালের চারপাশে ঘুরছে। সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তারা সরাসরি হাসপাতালকে টার্গেট করেছে।’ 
ইতোমধ্যেই আল-শিফা হাসপাতালের অভ্যন্তরে থাকা মানুষ অন্যান্য বিল্ডিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছে। ইআর বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক ওমর জাকাউত বলেন, ‘সবাই ভবনের ভেতরে আশ্রয় নিচ্ছে এবং জানালা ও দরজা থেকে দূরে অবস্থান করছে। আমরা জানি না বাইরে কি হচ্ছে, আমরা যা শুনছি তা হলো বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ, বয়স্ক মানুষের চিৎকার এবং শিশুদের কান্না।’ 

ইসরাইলে আকস্মিক এ হামলায় বেশ চিন্তিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিথস আল-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার পর ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ ও ‘শঙ্কিত’। তিনি তার এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন, ‘হাসপাতাল যুদ্ধক্ষেত্র নয়।’ 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস লেখেন, ‘আল-শিফা হাসপাতালে সামরিক অনুপ্রবেশের রিপোর্ট গভীরভাবে উদ্বেগজনক। আমরা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ হারিয়েছি। আমরা তাদের এবং তাদের রোগীদের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত চিন্তিত।’ 

অন্যদিকে গাজার খান ইউনুসে নতুন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন আশ্রয়প্রার্থীরা। বৃষ্টি বাস্তুচ্যুতদের জন্য নতুন কষ্ট নিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেন, সৌর প্যানেলগুলো এখন আর কাজ করছে না। ফলে আরও বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘একদিনের মধ্যে আমাদের জেনারেটরের জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে এবং তখন আমাদের কিছুই থাকবে না।’ 
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম