গাজায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১০০ বড় গর্ত
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৪ পিএম
একটি স্যাটেলাইট চিত্র ইসরাইলের বোমা হামলার পর উত্তর গাজা উপত্যকায় প্রায় বর্গকিলোমিটারে ১০০ গর্ত শনাক্ত করেছে। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে শনিবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গর্তগুলোর ১০০টি প্রায় ৪৫ ফুট (১৩.৯ মিটার) পর্যন্ত গভীর। একটি এলাকায় আধা কিলোমিটার চওড়া গর্তও দেখা গিয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনী আবাসিক ব্লকগুলোতে অবিরামভাবে মারাত্মক বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামলার কারণে উত্তর গাজার বেশ কয়েকটি শিক্ষাকেন্দ্র পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অসংখ্য ভবন। জাতিসংঘের শিশু তহবিল অনুসারে, ২০০টিরও বেশি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজা উপত্যকার মোট বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ। গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ ফিলিস্তিনের চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও রেহাই দেয়নি। চিকিৎসাব্যবস্থাকে বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে ফেলেছে। হাসপাতালগুলো খোলা থাকার জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, অবরুদ্ধ গাজায় ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ১৬টি ইসরাইলি বোমা হামলা বা জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতালগুলো হলো, তুর্কি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল (একমাত্র হাসপাতাল যা গাজার ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা করে), বেইট হনউন হাসপাতাল, আল-ওয়াফা হাসপাতাল, পাবলিক এইড হাসপাতাল, রোগীর দাতব্য হাসপাতাল, আল-কারামা বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল, হাইফা দাতব্য হাসপাতাল, আন্তর্জাতিক চক্ষু হাসপাতাল, মানসিক হাসপাতাল, শহিদ মোহাম্মদ আল-দুররাহ শিশু হাসপাতাল, হামাদ পুনর্বাসন ও প্রস্থেটিক হাসপাতাল, দার আল-সালাম চ্যারিটেবল হাসপাতাল, আল-ইয়েমেন আল-সাঈদ হাসপাতাল, সেন্ট জন আই হাসপাতাল, আল-হায়াত বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল ইয়াফা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৭২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মধ্যে ৫১টি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
চরম হুমকির মুখে নবজাতকদের জীবন : জাতিসংঘ
গাজা উপত্যকায় নবজাতকদের জীবন চরম হুমকির মুখে পড়েছে। সেখানে ইসরাইলি হামলায় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় নারীদের অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রাস্তায় সন্তান প্রসব করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থা যৌথ বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে। যৌথ বিবৃতি দেওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে, জাতিসংঘ শিশু তহবিল, ইউনাইটেড ন্যাশন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফুজিস ইন দ্য নেয়ার ইস্ট, জাতিসংঘের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রয়োজনীয় পরিচর্যার সুযোগের অভাবে মাতৃমৃত্যু বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ এদিকে নানা কারণে ‘নবজাতকের জীবনও একটি সুতোয় ঝুলে থাকে। যদি হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সামগ্রী শেষ হয়ে যায় তাহলে নিবিড় পরিচর্যা পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১৩০ শিশুর জীবন অকালে হুমকির মুখে পড়বে।’ জাতিসংঘের ওই সংস্থাগুলো বলেছে, ‘গাজায় প্রায় ৫০ হাজার গর্ভবর্তী মহিলা রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮০ জনেরও বেশি প্রতিদিন সন্তান প্রসব করে। এসব মহিলার মধ্যে ১৫ শতাংশ গর্ভাবস্থা বা প্রসবজনিত জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে এবং তাদের বাড়তি চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।’ তাস।