
ইসরাইলের একের পর এক হামলায় চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে গাজাবাসী। বেঁচে থাকার জন্য প্রতিনিয়তই লড়াই করতে হচ্ছে তাদের। খাদ্য, বাসস্থান, বিদ্যুতের পাশাপাশি সুপেয় পানিরও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ সংকট। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি। গাজার পানি সরবরাহ অনেকটা শেষ করে দিচ্ছে ইসরাইল বাহিনী। সরবরাহ কমার আগে গাজায় গড় পানির ব্যবহার ছিল ৮৪ লিটার, যা বর্তমানে কমে গড়ে মাত্র ৩ লিটারে নেমে এসেছে, এমনটাই অনুমান করছে জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও। দ্য গার্ডিয়ান।
অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে অধিকাংশ পানিসম্পদ এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণ করে ইসরাইল। গাজার বেশির ভাগ পানি আসে উপকূলীয় অ্যাকুইফারের একটি ছোট অংশ থেকে। তবে এ পানি নোনা এবং অপরিশোধিত হওয়ায় ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বিশাল চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। অবশিষ্ট পানি আসে একটি ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট এবং কূপ থেকে। এই পানিই ইসরাইল থেকে কিনে আনা হয়। হামাস অভিযানের পর থেকে গাজায় জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে গাজার ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টটি। জ্বালানি বা বিদ্যুৎ ছাড়া গাজার বাড়িঘর, হাসপাতাল, খামার এবং স্কুলে পানি সরবরাহ করা এখন অসম্ভব। গাজার অনেক ভবনে কূপও আছে, কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়া এই কূপগুলো পানি পাম্প করা যাচ্ছে না। পানি সরবরাহ কমে যাওয়ায় পানিশূন্যতার কারণে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে চলেছে। পানিশূন্যতার কারণে ক্লান্তি, মাথাঘোরা, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলোর বিকলাঙ্গ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার ত্রাণ সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘জ্বালানির ঘাটতি গাজার বাসিন্দাদের দূষিত জল ব্যবহার করতে বাধ্য করছে। কারণ বেশিরভাগ জল পানযোগ্য নয়। জনগণের কাছে বিশুদ্ধ পানি পরিবহণের জন্য আমাদের জ্বালানি দরকার। সবই খুব জটিল হয়ে উঠছে। যদি আমাদের কাছে পানি, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি থাকে তবে জীবন বাঁচানো অনেকটা সহজ হবে।’