Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

জিএসআই নিয়ে চীনের অনুরোধ এড়িয়ে যেতে চায় নেপাল!

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:১৯ পিএম

জিএসআই নিয়ে চীনের অনুরোধ এড়িয়ে যেতে চায় নেপাল!

নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের সাম্প্রতিক চীন সফরে বাণিজ্য, সড়ক সংযোগসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে ৭টি সমঝোতা স্মারকসহ (এমওইউ) ১২টি চুক্তি সই হয়েছে।  

সোমবার বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এসব চুক্তি সই হয়।

কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানিয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নেপালকে গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (জিএসআই) এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশনাল ইনিশিয়েটিভকে (জিসিআই) স্বাগত জানাতে চাপ দিচ্ছে চীন। একইসঙ্গে এই দুটি উদ্যোগে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।

বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে ‘নতুন অবস্থান’কে আনুষ্ঠানিক করার লক্ষ্য ঠিক করেছে চীন। এর ফলে বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে নেপাল।

দেশের রাজনীতিতে কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন চীনপন্থী কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন পুষ্প কমল। গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম চীন সফরে গেলেন তিনি। এর আগে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন পুষ্প কমল।

চীনের হাংঝো শহরে যাওয়ার আগে নিউইয়র্কে কাঠমাণ্ডু পোস্টের সহযোগী প্রকাশনা কান্তিপুরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী দহল স্পষ্টভাবে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত জোটে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা অস্বীকার করেন। 
তবে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীন জিএসআই, জিসিআই এবং গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) শুরু করছে। এর মধ্যে জিডিআইতে অংশ নিতে নেপালের কোনো দ্বিধা নেই।

প্রধানমন্ত্রী দহল বলেন, আমরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে যেতে পারি না। কোনও পক্ষের ছত্রছায়ায় না থাকা আমাদের ঘোষিত নীতি। আমরা জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলি। অন্যদিকে আমরা বলছি মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) এবং স্টেট পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম (এসপিপি) নিরাপত্তা উদ্যোগের অংশ। আমরা যদি একটি উদ্যোগে অংশ না নিই, তবে আমরা অন্যদের সঙ্গেও যোগ দিতে পারি না।

কিন্তু এর ঠিক একদিন পর গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) হাংঝো শহরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের সময় কিছুটা পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করেন দহল। 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দহল বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রস্তাবিত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা ও উদ্যোগকে সমর্থন করে নেপাল।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী দহলকে উদ্ধৃত করে বলেছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উত্থাপিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা এবং উদ্যোগকে সমর্থন করে নেপাল।

বেইজিংয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনায় জড়িত নেপালের এক কর্মকর্তা কাঠমাণ্ডু পোস্টকে টেলিফোনে বলেছেন, চীন যৌথ বিবৃতিতে জিএসআই এবং জিসিআই সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, তাই আমাদের কিছু আপত্তি রয়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা ও কৌশলগত ধারণা সম্বলিত যে কোনো ধারা অপসারণের জন্য চীনের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা জিএসআই-এর অংশ হতে চাচ্ছি না এবং এ বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছি না।

দেশটির ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিডি ভট্ট বলেন, কান্তিপুরকে দেওয়া দহলের সাক্ষাৎকার এবং চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সময় তার বক্তব্য একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা আমাদের বাস্তবতা যে আমরা জিএসআই-তে যোগ দিতে পারি না। ঠিক যেভাবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের এসপিপিতে যোগ দিতে অস্বীকার করেছি, সেভাবেই আমরা জিএসআই-এর অংশ হতে পারি না, যা চীনের নিরাপত্তা কাঠামো। তবে চীন এখনও আশা করছে নেপাল তার নিরাপত্তা উদ্যোগে যোগ দিতে পারে।

২০১৭ সালে চীনের উচ্চাভিলাষী বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা বিআরআই-তে যোগ দেয় নেপাল। যদিও নেপালে বিআরআই বাস্তবায়ন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, তবে এর অধীনে একটি প্রকল্পও শুরু হয়নি।

এর আগে নেপালে একের পর এক প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছিল চীন। এটি নিয়ে নেপালের কূটনৈতিক মহলে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম