কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা মামলার প্রতিবাদ
লন্ডনে সশস্ত্র ডিউটিতে রাজি নয় পুলিশ, সেনা মোতায়েন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম
কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে গুলি করে হত্যা মামলার প্রতিবাদে লন্ডনে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। অভিনব এ প্রতিবাদে সশস্ত্র ডিউটিতে যাচ্ছেন না একশরও বেশি পুলিশ।
লন্ডনে পুলিশ সদস্যদের এই সিদ্ধান্তের পরই রোববার সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বর্তমানে তাদের স্ট্যান্ড বাই অবস্থায় রাখা হয়েছে।
সোমবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লন্ডন মেট পুলিশের কিছু কর্মকর্তা ডেইলি মেইলকে জানিয়েছেন, পুরো ব্রিটেনজুড়েই ছড়িয়ে পড়তে পারে এ বিক্ষোভ। শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট রাখতে আর্মড পুলিশ নামানো হয়েছে।
লন্ডনের বেশ কিছু স্থানে এদিন আর্মড পুলিশের ছোট ছোট দল দেখা গেছে। বিবিসি, গার্ডিয়ান।
প্রতিবাদরত মেট্রোপলিটন পুলিশের বক্তব্য, যেহেতু তাদের সহকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, তাই অস্ত্রসহ ডিউটিতে তারা যোগ দেবেন না।
পুলিশ সদস্যদের এ সিদ্ধান্তের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রেভারম্যান বলেছেন, ‘পুলিশ সদস্যদের সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মতো কম সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’ পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রথমে বেশ কয়েকজন সদস্য সশস্ত্র ডিউটিতে যোগ দিতে অস্বীকার করেন। তারপর এ সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, পুলিশ সদস্যরা উদ্বিগ্ন। তারা দেখতে চান কীভাবে এ সিদ্ধান্ত তাদের ও তাদের পরিবারের ওপর প্রভাব ফেলবে। তারা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা নির্দিষ্ট কিছু কাজে পুলিশকে সহায়তা করবে। প্রধানত সন্ত্রাসবিরোধী কাজের ক্ষেত্রে। লন্ডনে এর জন্য বিশেষ সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা আছেন, যারা এখন কাজে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন। যুক্তরাজ্যে সব পুলিশ সদস্যের হাতে অস্ত্র থাকে না। যাদের হাতে অস্ত্র থাকে, তারা বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ২৪ বছর বয়সি কৃষ্ণাঙ্গ যুবক ক্রিস কাবার মৃত্যু হয়েছিল পুলিশের গুলিতে। যে পুলিশ সদস্যের গুলি লেগে তার মৃত্যু হয়, তার নাম জানানো হয়নি। তাকে এনএক্স ১২১ হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ক্রিস কাবা দক্ষিণ লন্ডনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাকে গুলি করে পুলিশ। একটা গুলিতেই তার মৃত্যু হয়। ক্রিস কাবার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। পরে অভিযোগ ওঠে, এটা হলো বর্ণবাদী ঘটনা। পরে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়।
কাবার পরিবার তাকে স্বাগত জানায়। ওই অফিসার শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন। আগামী বছর তাকে মামলার মুখোমুখি হতে হবে।
২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ক্রিস কাবাসহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে। সাধারণত কেউ ছুরি বা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করলে পুলিশ গুলি চালায়। যুক্তরাজ্যে তাই পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে মামলাও খুবই বিরল ঘটনা।