মর্গে জায়গা নেই, ফুটপাতে ফেলে রাখা হচ্ছে লাশ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ও ভয়াবহ বন্যায় লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দুটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। একের পর এক বেরিয়ে আসছে লাশ। মর্গে জায়গা না হওয়ায় অনেক লাশ ফুটপাতে ফেলে রাখা হচ্ছে। প্লাবিত এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্ধারকাজে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে লিবিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেডক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধিদলের প্রধান তামের রমাদান নিখোঁজদের সংখ্যা বর্ণনা দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর সংখ্যাটা বিশাল’।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে— বন্যায় অন্তত পাঁচ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৪৫ জন মিশরীয় বলে লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর টোব্রুকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়-বন্যায় নিহত দেড় শতাধিক
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওসমান আব্দুল জলিল বলেন, বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেরনাতে প্রায় ছয় হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। বন্যার পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে আখ্যা দেন তিনি।
জরুরি এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার মুখপাত্র ওসামা আলী বলেন, দেরনার হাসপাতালগুলো আর পরিচালনাযোগ্য নয় এবং মর্গগুলো লাশে পূর্ণ। লাশগুলো মর্গের বাইরে ফুটপাতে ফেলে রাখা হয়েছে। পচা লাশ উদ্ধারে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
বন্যায় ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত শহর দেরনায় বসবাসকারী লোকজনের স্বজনরা বলেন, বন্যার ভিডিও দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
ফিলিস্তিনি নারী আয়াহ বলেন, বন্যার কারণে দেরনায় থাকা চাচাতো ভাইদের কাছে তিনি পৌঁছাতে পারছেন না।
তিনি বলেন, আমি সত্যিই তাদের নিয়ে চিন্তিত। আমার দুই চাচাতো ভাই আছে, যারা দেরনায় থাকে। মনে হচ্ছে সব যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং আমি জানি না তারা এই সময়ে বেঁচে আছে কিনা। দেরনা থেকে বেরিয়ে আসা ভিডিও দেখে খুব ভয় লাগে। আমরা সবাই আতঙ্কিত।
টোব্রোকের বাসিন্দা এমাদ মিলাদ জানান, দেরনায় বন্যায় তার আট স্বজন মারা গেছেন। তিনি বলেন, ‘বন্যায় আমার শ্যালিকা এবং তার স্বামী দুজনেই মারা গেছেন। তার পুরো পরিবারের মোট আটজন মারা গেছেন।
ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েল লিবিয়ায় বিধ্বংসী বন্যার সৃষ্টি করেছে। এটি সমগ্র এলাকাকে ভাসিয়ে নিয়েছে। উত্তর আফ্রিকার দেশটির পূর্বাঞ্চলের একাধিক উপকূলীয় শহরে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
লিবিয়ার বিদ্রোহীদের দখলে থাকা দেরনায় বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। লিবিয়ায় বর্তমানে দুটি সরকার রয়েছে। একটি সরকার পূর্বাঞ্চল এবং আরেকটি সরকার পশ্চিমাঞ্চল শাসন করে। দুটি সরকারই বিদেশি দেশগুলোর দ্বারা স্বীকৃত। তবে জাতিসংঘ শুধু ত্রিপোলি সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।