Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

পুতিনের হাত ধরে যেভাবে ধ্বংস হয়েছে রাশিয়ার কূটনীতি

Icon

সজীব হোসেন

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২৯ পিএম

পুতিনের হাত ধরে যেভাবে ধ্বংস হয়েছে রাশিয়ার কূটনীতি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: বিবিসি

এক সময় প্রেসিডেন্ট পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন রাশিয়ার কূটনীতিকরা। তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হতো। তবে দিন বদলেছে। 

ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর রুশ কূটনীতিকরা তাদের কর্তৃত্ব হারিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি গঠনে আর কূটনীতিকদের পাত্তা নেই বললেই চলে। 

কীভাবে রাশিয়ার কূটনীতি ধ্বংস হয়েছে। এ বিষয়ে সাবেক ক্রেমলিনের কয়েকজন কূটনীতিক, হোয়াইট হাউস ও সাবেক পশ্চিমা কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। 

পুতিনের পরিবর্তন ও একটি নতুন স্নায়ুযুদ্ধ
২০০০ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বিবিসিকে একবার বলেছিলেন, ন্যাটোকে সহযোগিতায় ও এ জোটে যোগ দিতে রাশিয়া সদাপ্রস্তুত। রাশিয়া ইউরোপ থেকে আলাদা হয়ে থাকবে, এটা হতেই পারে না। 

এক ক্রেমলিন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এ কথা শুনতে অবাক লাগলেও, ক্ষমতায় বসার শুরুর দিকে পুতিন পশ্চিমাদের প্রতি বেশ নরম ছিলেন। 

এক সময় রাশিয়ার কূটনীতিকরা পুতিনের দলের অংশ ছিলেন। চীন, নরওয়ের সঙ্গে ভূখণ্ডগত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে, ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে বেশ ভূমিকা ছিল রুশ কূটনীতিকদের।

কার্নেজি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের পরিচালক আলেকজান্ডার গাবুয়েভ বলেছেন, ধীরে ধীরে যখন পুতিন ক্ষমতাবান ও দক্ষ হতে লাগলেন, তিনি নিজেকে সর্বেসর্বা ও সর্বজ্ঞ মনে করতে শুরু করলেন। কূটনীতিকদের মতামত আমলে নেওয়া কমিয়ে দিলেন। 

২০০৭ সালে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে এক বক্তব্যের সময় পুতিন নতুন একটি স্নায়ুযুদ্ধের ইঙ্গিত দেন। ৩০ মিনিটের বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, পশ্চিমা দেশগুলো একটি একপাক্ষিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ার চেষ্টা করছে। এর এক বছর পর জর্জিয়ায় আক্রমণ চালাল রাশিয়া। 

কূটনীতিকদের আচরণগত পরিবর্তন
পুতিনের অধীনে দিন দিন কূটনীতিকদের আচরণেও পরিবর্তন এসেছে। এমন একটি উদাহরণ হলো মারিয়া জাখারোভা। যিনি ২০১৫ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

যুদ্ধ বাধানোর প্রতিবাদে পতত্যাগকারী রাশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বোরিস বোন্দারেভ বলেছেন, আগে কূটনীতিকরা কূটনীতিকের মতো আচরণ করতো। তাদের একটি ভদ্রোচিত বাচনভঙ্গি ছিল। এখন তা নেই। 

মারিয়া জাখারোভা প্রায়ই প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় প্রতিবেদকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে থাকেন। তাকে কেউ কঠিন প্রশ্ন করলে ব্যাপক সমালোচনা করেন তিনি। এমনকি প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় বিভিন্ন দেশের নাম ধরে নিন্দা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার নজিরও রয়েছে তার। 

রাশিয়ার দিকে আঙুল তুলতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন, কোনো পক্ষেরই ছাড় দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না। এক বছরের বেশি সময়েও যুক্তরাষ্ট্র এ যুদ্ধ থামাতে পারেনি। আগামীতেও রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা না হলে এ যুদ্ধ থামবে বলে মনে হয় না। 

কূটনীতিকবিদরাও এ যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ। বেশ কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানতে পেরেছে, ৯৫ শতাংশ বৈঠক হয় অনর্থক। কূটনীতিকরা আসেন, বসেন, কফি খান, চলে যান। 

ইউক্রেন যুদ্ধে কোনোভাবেই হার মানতে প্রস্তুত না পুতিন। কূটনীতিকদের দাবি, রাশিয়া ফের সহনশীলতার বদলে কঠোরতার পথ অবলম্বন করছে। কূটনীতিকদের গুরুত্ব না দিয়ে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করছেন পুতিন। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম