ফাইল ছবি
চীনের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় দুর্নীতির ‘পোকা’ দীর্ঘদিনের। হাসপাতালের বিল বাড়াতে অতিরিক্ত প্রেসক্রিপশন, ফার্মেসিতে ওষুধের অতিরিক্ত দাম- দেশটির নিত্যদিনের চর্চা। আর এসব দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসার খরচ বহন করা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের শরীরে রক্ত চোষার মতো জেঁকে বসা এ দুর্নীতির পোকা অপারেশনে এবার হাসপাতাল, ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প ও বিমা তহবিলগুলোকে লক্ষ্য করে একটি বড় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছে চীন। সিএনএন।
রাষ্ট্রীয় সংস্থা চায়না নিউজের মতে, চলতি বছর ১৮০টিরও বেশি হাসপাতাল নেতাদের এ পর্যন্ত তদন্তের অধীনে রাখা হয়েছে। তদন্তের অধীনে জুন থেকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে আছে অন্তত ১০ জন কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি ও হাসপাতালের প্রধান।
অন্যান্য রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তের অধীনে থাকা হাসপাতাল নেতার সংখ্যা গত বছরের একই ধরনের মামলার সংখ্যা থেকে দ্বিগুণ।
২০২১ সালে দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাদের প্রকাশিত একটি মামলায় দেখা যায়, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশের একটি ছোট হাসপাতালের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ। এই সভাপতি ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যবহৃত একটি মেডিকেল ডিভাইস ক্রয়ের বাজেট থেকে ২.২ মিলিয়নেরও বেশি সরিয়ে দিয়েছিলেন।
চীনের বেইহাং ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টিগ্রিটি রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনের প্রধান রেন জিয়ানমিং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় সরকারগুলো যে গতিতে তদন্ত চালাচ্ছে আর যেসব শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তা চিত্তাকর্ষক।
অন্যান্য রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে চীনের স্বাস্থ্যসেবা খাতের এই দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে এর ‘গভীরতা, প্রশস্ততা ও তীব্রতায় অভূতপূর্ব’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই অভিযানটিকে এখন পর্যন্ত চীনের সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী প্রচেষ্টা বলে সম্মত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের বিশ্ব স্বাস্থ্য বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ইয়ানঝং হুয়াং এর মতে, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী ক্রয়ক্ষমতার সমস্যা মোকাবিলার একটি উপায় হতে পারে দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টা।
তবে এটি জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরও যেসব জরুরি সংস্কার প্রয়োজন সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে যায়। সরকারের নিজস্ব দায়িত্ব থেকে নজর অন্যদিকে সরিয়ে দেয়।