যেই কথা সেই কাজ, অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর গদি ছাড়লেন হুন সেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন নির্বাচনের পর ছেলের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন। সোমবার সেটাই বাস্তবায়ন করলেন কম্বোডিয়ার ‘গণতান্ত্রিক মডেলের’ স্বৈরশাসক হুন সেন (৭১)।
ছেলে হুন মানেটের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন তিনি। হুন সেনের অনুরোধেই এদিন হুন মানেটের নিয়োগ অনুমোদন দিয়ে আদেশ (ডিক্রি) জারি করেন দেশটির রাজা নরোদম সিহামোনি। এর ফলে কম্বোডিয়ার পরবর্তী নেতা হলেন ৪৫ বছর বয়সি হুন মানেট। তবে তার আগে মানেটকে সংসদে আস্থা ভোটে জিততে হবে। ২২ আগস্ট ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। এএফপি, সিএনএন, রয়টার্স।
রাজার এই ডিক্রির মাধ্যমে ৩৮ বছর দেশ শাসন করে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গেলেন এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি শাসক হুন সেন। ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করে রাজার ডিক্রি জারির খবর হুন সেন নিজেই তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশ করেছেন। সাবেক খেমার রুজ নেতা হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করেছেন।
গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে গিয়ে বড় ছেলের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই নির্বাচনে হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) সংসদের নিম্নকক্ষের ১২৫টি আসনের মধ্যে ১২০টি আসনে জয়লাভ করে। বিরোধী দল ক্যান্ডেললাইট পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
পশ্চিমা বিশ্ব এই নির্বাচনকে প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছে। নির্বাচনের কম্বোডিয়ায় কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে বিদেশি কিছু সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, কম্বোডিয়ার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সিপিপি দলের কোনো শক্ত বিরোধী দল নির্বাচনে ছিল না। ক্ষমতায় থাকাকালে হুন সেন বিরোধী দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন এমন ব্যক্তিদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছেন । বাক-স্বাধীনতা খর্ব করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানেট গত মাসে একটি আসনে জয়ী হয়েছেন। এতদিন তিনি কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।