প্রথমবারের মতো উত্তর গাজার বেইট লাহিয়ার কৃষক মোহাম্মদ আবু লাহিয়া (৩৯) তার খামারে লাল ভুট্টা চাষে সফল হন। ভিন্ন স্বাদের এ লাল ভুট্টা মানব শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে। যা লাহিয়াকে এ ভুট্টা চাষের জন্য কৌতূহলী করে তোলে। যার চাষ পদ্ধতিও অনেক সহজ বলে জানান তিনি।
সংবাদ মাধ্যম দ্য নিউ আরবকে বলেন, তিনি দু’ মাস আগে লাল ভুট্ট রোপন করেন। রোপন করা ফল প্রথম দফায় কাটার পর তা বন্ধু ও আত্বীয়দের কাছে বিনামূল্যে দিয়ে দেন।
আরও বলেন, ‘তখন অনেকে মনে করেন, আমি আমার ফলগুলো রঙিন করেছি।’ তাই অনেকে খেতে অনিহা প্রকাশ করে। কিন্তু খাওয়ার পর অনেকেই তাকে আরও লাল ভুট্টা চাষের জন্য উৎসাহ দেন। প্রথম দিকে সফলতা নিয়ে সন্দীহান থাকলেও, পরবর্তীতে সাহস নিয়ে এগিয়ে যন লাহিয়া।
টিএনএকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যেহেতু আমি ছোটোবেলা থেকে বাবার সাথে কৃষি কাজ করে আসছি, আমি জানি জমিতে সব কিছু উৎপাদন করা সম্ভব। তাই আমি এ দুঃসাহসিক কাজের সিধান্ত নিয়েছি।’ লাল ভুট্টা সম্পর্কে সব তথ্য সম্পর্কে জানতে লাহিয়া প্রতিদিন অনেক সময় ব্যয় করেন।
লাল ভুট্টা মূলত আঁশের একটি উৎস। যা পরিপাকতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ। যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতা বজায় রাখে। আরও রয়েছে, ক্যালসিয়াম। যা হাড় ও দাঁতকে মজবুত করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও ভুট্টার দানা ভিটামিন সি, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, তামা, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়ামসহ অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহ করে। রঙ্গিন দানা গুলোতে অ্যন্থোসায়ানিন পিগপেন্টযুক্ত যৌগ রয়েছে বলে জানান লাহিয়া। যৌগগুলোতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট। যা মানবদেহেকে বিভিন্ন ক্ষতি সহ প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে পারে। লাহিয়া এসব সুবিধার দ্বারা কৌত‚হলী হয়ে লাল ভুট্টার বীজ চাষ করার সিধান্ত নেন।
লাহিয়া বলেন, ‘লাল ভুট্টার চাষ সহজ। কারন এ ভুট্টা চাষের সময় সেচ প্রক্রিয়ার জন্য খুব বেশি পানির প্রয়োজন হয় না। রোপন করা যায় বছরের সব ঋতুতে।’ আরও যোগ করেন, চাষ পদ্ধতিটি সব ধরনের আবহাওয়ার সাথে মোকাবেলা করতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য ফসলের তুলনায় সারও লাগে কম।’
তিনি জানান দশ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় তার লাল বুট্টা কাটতে চলেছেন। সেগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জনের আশা রাখেন। যা তার পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করবে। লাহিয়ার এ উদ্যোগে গাজায় বাসরত মহিলা সাবরিনা আবু জাবাল উৎসাহ প্রকাশ করেন।