কম্বোডিয়ায় ফের ফাঁকা মাঠে গোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী হুন সেন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩, ১০:৪১ পিএম
আবারও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাশ। বরাবরের মতো এবারও মহাধুমধামে ফাঁকা মাঠে গোল দিলেন কম্বোডিয়ার ‘গণতান্ত্রিক মডেলের’ স্বৈরশাসক হুন সেন (৭০)। নির্বাচনের আগে প্রধান বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করে ‘লোক দেখানো’ এ নির্বাচনে ভূমিধস জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন হুন সেন। শুক্রবারও নির্বাচনি প্রচারণার শেষদিনে লাখ লাখ সমর্থক নিয়ে মহাসমারোহে প্রচারণা চালিয়েছেন হুন সেনের বড় ছেলে চার তারকা জেনারেল হুন মানেট (৪৫)।
ভোট গণনার আগেই ভূমিধস জয় পেয়েছি বলে আগাম ঘোষণা দেয় ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান জনতা পার্টি (সিপিপি)। দলের মুখপাত্র সোক আইসান এএফপিকে বলেন, ‘ভোটে আমরা ভূমিধস জয় পেয়েছি। তবে আমরা এখনো আসন সংখ্যা গণনা করতে পারিনি।’ প্রধানমন্ত্রী হুন সেন বলেছেন, ‘নির্বাচনে ৮৪% ভোটের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, ভোটকে দুর্বল করার জন্য ‘চরমপন্থি’ বিরোধীদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।’
দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার মাধ্যমে হুন সেন মূলত রাজবংশীয় নীতি ধরে রাখার পথ প্রশস্ত করেছেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি তার ছেলে মানেটের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন আগাইে। আগামী সপ্তাহেই এই ক্ষমতা হস্তান্তর করার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৯৩ সালে প্রথম নির্বাচনের পর থেকে কম্বোডিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সপ্তম সাধারণ নির্বাচন। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা) থেকে বিকাল ৩টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
কম্বোডিয়ার সাধারণ এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে সিপিপিসহ আরও ১৭টি ছোট ছোট দল। নির্বাচনে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছিল দেশের ৯.৭ মিলিয়নেরও বেশি জনগণ। নির্বাচনে হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) নিম্নকক্ষের ১২৫টি আসনেই জয়ী হওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছেন। হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করে আসছেন। তার এ দীর্ঘ ৩৮ বছরের শাসনামলে কোনো নির্বাচনেই সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হননি। বিরোধী দলগুলোকে নিষিদ্ধকরণ, নির্বাসন দেওয়া অথবা তাদের জেলে পাঠানোর মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অবরোধ করে রেখেছেন।
ভোটের আগের দিন বার্তা সংস্থা আলজাজিরাকে সোভানি নামে এক নাগরিক বলেন, ‘আমি ভোটই দেব না। কেন আমি ভোট দিতে যাব, যেখানে নির্বাচনে একটিমাত্র দলই অংশ নিয়েছে? ভোট দিতে যাওয়া তো স্রেফ সময়ের অপচয়।’ সোভানি বলেন, ‘খেলার মাঠে অন্তত দুজন প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী একজন হলে সেই খেলার আর কোনো অর্থ থাকে?’ জনগণের কাছে একমাত্র আস্থাভাজন প্রধান বিরোধী দল ‘ক্যান্ডেল লাইট পার্টিকে’ নির্বাচনে অনুপস্থিত থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। নানা কৌশলে মে মাসে দলটিকে নিষিদ্ধ করে হুন সেন সরকার। এর আগে ২০১৮ সালে হুন সেন যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখনো বিরোধী দলকে দমনে একই পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। সে সময়কার জনপ্রিয় প্রধান বিরোধী দল কম্বোডিয়া ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টিকেও আৃদালতের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।