আবার নতুন করে সহিংসতা ছড়াল ভারতের মণিপুর রাজ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর জেলার সীমানায় কয়েকটি ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে এক কিশোরও রয়েছেন।
গত দুই মাস ধরে এই দুই জেলার সীমানা দফায় দফায় সহিংসতার কারণে উত্তপ্ত। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে অনেক। দুই জেলার সীমানায় সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারি সত্ত্বেও বারবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর এনডিটিভি।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে দুষ্কৃতকারীরা এই দুই জেলায় ঢুকছেন। এরপরই নতুন করে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
শুক্রবার রাতেও দুই জেলার সীমানার দুই ধার থেকে গোপনে দুষ্কৃতকারীরা ঢুকেছিলেন। তার পরই আবার নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তারা বেশ কিছু বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী পালটা জবাব দেওয়ায় সেই ঘটনা এড়ানো গেছে।
এছাড়া শুক্রবার রাতে পুলিশ কন্ট্রোলরুম থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু জায়গায় নতুন করে উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কিছু জায়গায় গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে। তবে বেশির ভাগ জেলায়ই পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
অন্যদিকে শুক্রবার যৌথ অভিযানে নামে মণিপুর পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। ইম্ফলের পূর্ব ও পশ্চিম, চূড়াচাঁদপুর, বিষ্ণুপুর, কাকচিং জেলায় অভিযান চালিয়ে দুষ্কৃতকারী ও জঙ্গিদের ১৮টি বাংকার গুঁড়িয়ে দিয়েছে যৌথ বাহিনী।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০টি বাংকার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এ অভিযানে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, ৭৪টি গুলি ও অত্যন্ত শক্তিশালী পাঁচটি হ্যান্ডগ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে দুই মাস ধরে চলা ধারাবাহিক সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা অনেক আগেই ১০০ ছাড়িয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক করলেও পরিস্থিতি বদলায়নি।
গত ৩ মে মণিপুরের আদিবাসী ছাত্র সংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব মণিপুরের (এটিএসইউএম) বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি আদিবাসীর মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই আদিবাসী সংগঠনগুলো তার বিরোধিতার পথে নামে। দীর্ঘ অশান্তির পর অবশেষে ছন্দে ফিরছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটি।