শ্রীলংকার অস্থিরতার ১ বছর, অনাহারে কাটছে ‘দাস দ্বীপের’ দিন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম
আন্তর্জাতিক ঋণখেলাপির পর থেকেই সময় ভালো যাচ্ছে না শ্রীলংকার। গত বছর ১৩ জুলাই দেউলিয়া হওয়ার পরপরই দেশটির অর্থনীতিতে নামে বিরাট ধস। দেখা দিয়েছে খাদ্য, জ্বালানি ঘাটতি ও মুদ্রাস্ফীতি। দুর্ভোগের মাত্রা যেন খানিকটা বেশিই ‘স্লেভ আইল্যান্ড’ বা দাস দ্বীপে। রীতিমতো অনাহারে দিনাতিপাত করছে সেখানকার মানুষ। বহুকাল আগে তুর্কিদের দখলে থাকা দ্বীপটিতে দাসের ভূমিকা পালন করত আফ্রিকানরা। সেই থেকেই নামকরণ হয়েছে ‘স্লেভ আইল্যান্ডের’।
এ দুঃসময়ের আন্দাজ অনেক আগে থেকেই করেছিল দ্বীপটির বাসিন্দারা। তেমনি একজন হিসাবরক্ষক মিল্টন পেরেরা (৭৫) বৃহস্পতিবার এএফপিকে বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে টাকা ছিল পণ্য ছিল না, এখন আমাদের কাছে পণ্য আছে টাকা নেই।’ তিনি আরও জানান, তাদের বাঁধটি ফুটো হয়ে গেছে। টাকার অভাবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বাঁধটি মেরামতও করছে না। কিছুদিন আগেও সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধপত্র প্রদান করা হতো। এখন তাও বন্ধ হয়ে গেছে। তার পরিবারের বৈদ্যুতিক খরচ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে বিকল হওয়ার পর থেকে পেরেরা তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের প্রতিবেলার খাবারও জুটছে না। তার স্ত্রী পুষ্পলথা বলেন, ‘আমাদের মাংস, মাছ ও ডিমের সামর্থ্যও নেই। ভাত ও ডাল ভাগাভাগি করে খাচ্ছি। সেগুলোও খুব ব্যয়বহুল।’
মিলটন পেরেরা বর্তমানে পুরোনো একটি সরকারি ভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন। তার বাড়ি থেকে প্রেসিডেন্টের বাসভবন বেশ কাছে। পেরেরা স্যাঁতসেঁতে বাড়ির ছাদ থেকে পানি চুইয়ে পড়ছে। বিষয়টি মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষকে জানালেও সংস্কারের জন্য পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় মেরামত করতে আসেনি তারা।
বয়সের ভারের নুয়ে পড়েছেন পেরেরা। কথা বলার ফাঁকে রান্নাঘরের টুকটাক কাজ সেরে নিচ্ছিলেন। কিন্তু শ্বাসকষ্টের কারণে হাঁপাচ্ছিলেন তিনি। মাসদুয়েক আগে কল্যাণ তহবিল থেকে পাওয়া অর্থও বন্ধ হয়ে যায় পেরেরার। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে তহবিলের অর্থ ছাড় বন্ধ করা হয়েছে।