মণিপুর ছেড়ে মিজোরামে ছুটছে হাজার হাজার মানুষ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৩, ১০:৫০ পিএম
টানা ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে জাতবিদ্বেষের আগুনে জ্বলছে ভারতের মণিপুর রাজ্যে। এর মাঝেই মণিপুর থেকে প্রতিবেশী রাজ্য মিজোরামে পৌঁছেছেন ১২ হাজারের বেশি অসহায় মানুষজন। বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে রয়েছে ১৫০০-এর বেশি শিশুও। নিরুপায় হয়ে দিল্লির কাছে সাহায্যের আর্তি জানাচ্ছে মিজোরাম সরকার।
সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মিজোরামের মণিপুর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকের সংখ্যা ছিল ১২,১৬২, যার মধ্যে ২৯৩৭ জন ৩৫টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন এবং বাকিরা তাদের বন্ধুবান্ধব, আত্বীয়স্বজন এবং পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিশু-কিশোররা।
মিজোরাম সরকার তাদের স্কুলে ভর্তি করেছে যাতে এই শিশুদের শিক্ষার অধিকার কোনো কারণেই নষ্ট না হয়। মণিপুরে হিংসা অব্যাহত থাকায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে মিজোরাম সরকার।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মিজোরামের ক্যাবিনেট মন্ত্রী রবার্ট রায়টের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মণিপুরের বাস্তুচ্যুতদের সাহায্যের জন্য তহবিলের দাবিতে দিলিতে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। মিজোরাম সরকার বলেছে, ৩ মে থেকে শুরু হওয়া জাতিগত হিংসার কারণে মণিপুরের ১২,০০০ এরও বেশি মানুষ রাজ্যের ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
মে মাসে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা জাতিগত হিংসায় বাস্তুচ্যুতদের সুবিধা প্রদানের জন্য কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা চেয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোদিকে একটি চিঠিও লিখেছিলেন, কিন্তু প্রায় দুই মাস পরেও মিজোরাম সরকারকে কোনো রকম সাহায্য দেয়নি কেন্দ্র।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, জাতিগত দাঙ্গা কবলিত মণিপুর থেকে ১২ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে মিজোরাম। তাদের বেশিরভাগই ত্রাণশিবিরে এবং কিছু মানুষ তাদের আত্বীয়দের কাছে রয়েছেন।
মিজোরামের হোম কমিশনার লালেংমাওইয়া বলেছেন, এখন পর্যন্ত আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এক টাকাও সাহায্য হিসাবে পাইনি। আমরা গির্জা, সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ পরিষেবা প্রদান করছি।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি অবিলম্বে কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে দুই সপ্তাহের মধ্যেই জনগণকে সাহায্য করার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদের অভাব দেখা দেবে। বাজেট খুবই কম হলেও জনগণকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মিজোরাম সরকার।
মিজোরামের স্কুলগুলোতে অনেক পড়ুয়াকে ইতোমধ্যে ভর্তি করানো হয়েছে। মণিপুরে এখনো শান্তি ফিরে আসেনি। অনেক জেলায় কারফিউ বলবৎ রয়েছে, ইন্টারনেট ও স্কুল সবই বন্ধ।
রিপোর্ট অনুসারে, শুধু আইজল জেলাতেই চার হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এর জন্য ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএমএ) ১২টি ত্রাণশিবির খুলেছে। কেন্দ্রীয় ওয়াইএমএ-এর সহকারী সেক্রেটারি জানিয়েছেন যে, সংস্থাটি রাজ্য সরকারের কাছে আরও ত্রাণশিবির খোলার আবেদন জানিয়েছেন।