সম্প্রতি ইউক্রেনে ‘মরণব্যাধি’ নতুন এক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। নতুন আবিষ্কৃত এই মরণ ব্যাধি ব্যাকটেরিয়া খুব দ্রুত ইউরোপের বাকি অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সুইডিশ গবেষক অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান রিসবেকের বরাতে সায়েন্স ডেইলি এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়ার প্রায় ৬ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে। অতীতে এ ধরনের রোগীর অর্ধেক চীন থেকে শনাক্ত করা হয়। কিন্তু ইউরোপ এবং বাকি বিশ্বে উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকগুলোর কোনোটিই এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে না। সুইডেনের লুন্দ ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল ব্যাকটেরিওলজির অধ্যাপক রিসবেক ব্যাকটেরিয়া কোষের ওপর গবেষণার ফলাফলকে এক কথায় ‘ভীতিকর’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। লুন্দ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ইউক্রেনের ইউকাস্ট ল্যাবরেটরির সহযোগিতায় এই গবেষণা চালিয়েছেন।
অধ্যাপক রিসবেক ব্যাকটেরিয়ার সর্বাধিক শক্তির মাত্রাটি পরীক্ষা করে দেখেছেন। যুদ্ধে আহত ১৩১ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আট নবজাতকের শরীর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত নমুনায় বেশ কয়েকটি ব্যাকটেরিয়া আছে যা ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী।
গবেষকদের মতে, এই নতুন আবিষ্কৃত এবং বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়ার বর্তমানে কোনো কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়নি। যদি এখনই এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করা না হয় তাহলে এটি খুব দ্রুত ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান রিসবেক জানান, আমি আগে কখনো ইউরোপে এমন কিছু দেখিনি। ধারণা করেছিলাম ভবিষ্যতে বহু ধরনের ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কৃত হবে। কিন্তু তা যে এতটা ভয়াবহ হবে, তা আমরা কেউই ভাবতে পারিনি। এই বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। যা কোভিড-পরবর্তী বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
ইউক্রেনের হাসপাতালগুলোতে এই জীবাণুর আবিষ্কার রীতিমতো গবেষকদের বিস্মিত করেছে। তিনি বলেন, রোগীরা যখন হাসপাতালে ভর্তি হন তখন তারা সংক্রমিত হননি। কিন্তু চিকিৎসা করার সময় তারা এই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয় এবং এর কোনো সমাধানও আপাতত পাওয়া যায়নি।