যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা এখন বাইডেনের হাতিয়ার: ট্রাম্প
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ১০:৪২ পিএম
দেশের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত গোপন নথি চুরি করার অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তবে তাতে দমতে রাজি নন তিনি। তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার অভিযোগ তুলে এবার দেশের বিচারব্যবস্থাকেই দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তোপ দাগলেন ট্রাম্প। তার আক্রমণের লক্ষ্য থেকে বাদ যাননি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।
বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ, বিচারব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের কাছে রাখার অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার পর শনিবার প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এসে সমর্থকদের সামনে এভাবেই নিজের ক্ষোভ উগরে দেন ট্রাম্প। এএফপি, রয়টার্স, সিএনএন।
এদিন জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনা প্রদেশে রিপাবলিকানদের জনসভায় বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। জনসভা থেকে বিচারব্যবস্থা এবং বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে। যেভাবে দেশের বিচারব্যবস্থাকে আমার বিরুদ্ধে হাতিয়ার করা হচ্ছে, তা দেশের ইতিহাসে ক্ষমতার অপব্যবহারের চূড়ান্ত নজির।’ সমর্থকদের একজোট থাকার বার্তা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনাদের মাথায় রাখতে হবে যে, আপনারা কিছু পাগলের সঙ্গে লড়াই করছেন।’
কেন তাকে তথ্য চুরির মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তারও কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ট্রাম্প। তার মতে, ২০২৪-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই তার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে। তার জনপ্রিয়তা বাইডেনের তুলনায় ছাপিয়ে গেছে বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। দেশের গোপন তথ্য চুরির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর রিপাবলিকান দলের সতীর্থদেরও পাশে পেয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে ৩৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে ৩১টির মূল বিষয়ই হলো, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপন নথি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন তিনি।’ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশের তথ্য চুরির অভিযোগ এনেছিলেন যে আইনজীবী, তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘দেশের গোপন তথ্য সঠিকভাবে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য আইন আছে। আশা করব সেগুলো প্রয়োগ করা হবে।’ একইসঙ্গে তিনি আশা করেছেন, ট্রাম্পের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
এই মামলায় উঠে এসেছে তার সহকারী ওয়াল্ট নওটার প্রসঙ্গও। অভিযোগ, ফ্লোরিডার বাড়ির অন্তত ৬টি জায়গায় এসব গোপন নথি লুকিয়ে রাখতে ট্রাম্পকে সাহায্য করেছেন তিনি। এমনকি শৌচাগারেও নাকি সেসব নথি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মাঝে মধ্যেই নিজের বাড়িতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে অতিথি-অভ্যাগতরা আসেন। সেক্ষেত্রে দেশের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে জো বাইডেন প্রশাসন। এই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার মিয়ামির আদালতে উপস্থিত হতে পারেন ট্রাম্প। দোষী সাব্যস্ত হলে তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের সাজা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টকে ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত করার এমন ঘটনা নজিরবিহীন। তবে কোনো চক্রান্তই তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে পারবে না বলেও সমর্থকদের জোরালো বার্তা দেন ট্রাম্প।