বিশ্ব এখন একটি সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে উল্লেখ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, আমাদের মাতৃভূমির বিরুদ্ধে আবারও ‘সত্যিকারের যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার মস্কোর রেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। রয়টার্স, এএফপি, স্কাই নিউজ ও বিবিসি।
রাশিয়াকে বিজয়ী জাতি উল্লেখ করে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, আমাদের রাাশিয়া, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং আমাদের বিজয়ের জন্য! হুররে!
তিনি বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের মতো আমরাও শান্তিপূর্ণ, স্বাধীন এবং স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ দেখতে চাই। আমরা মনে করি, আধিপত্য বিস্তারের যে কোনো মতবাদের পরিণতি খুব ভয়াবহ।
গোটা দেশই এখন ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’র পেছনে রয়েছে উল্লেখ করে পুতিন এতে জয়লাভের অঙ্গীকার করেন।
পুতিন বলেন, মস্কো এ সবকিছুকেই জয় করবে। ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দেওয়া যেসব সেনা মস্কোর রেড স্কয়ারের কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেসব লড়াই আমাদের মাতৃভূমির ভাগ্য নির্ধারণ করে, সেটা সব সময়ই আমাদের কাছে জাতীয় এবং পবিত্র। আপনাদের লড়াই করে যাওয়ার চেষ্টার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এখন আর কিছুই নেই। কেননা, সম্মুখ সমরে যারা লড়াই করছেন তাদের ওপরই রাশিয়ার নিরাপত্তা নির্ভরশীল। গোটা দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে। সবাই আপনাদের জন্য প্রার্থনা করছে।
পুতিন বলেন, পূর্ব এবং পশ্চিমের কোনো দেশ রাশিয়ার শত্রু নয়। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার জন্য তিনি পশ্চিমাদের দোষারোপ করেন।
তিনি বলেন, তারা আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধকে নষ্ট করে দিচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গে তুলনা করে পুতিন বলেন, দেশ সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত রাখতে লড়ছে।
পুতিন তার ভাষণে বিশ্বজুড়ে সংঘাত, অভ্যুত্থান উসকে দেওয়ার পেছনে পশ্চিমা এলিটদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার ধ্বংস এবং পতন ডেকে আনা ছাড়া তাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই এবং এখানে নতুনও কিছু নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান ১৫ মাসে গড়িয়েছে। চলমান এই যুদ্ধের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার আবহে রাশিয়া ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানিকে হারানোর বর্ষপূর্তিতে ‘বিজয় দিবস’ উদ্যাপন করছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের দিন ৯ মে প্রতিবছরই রাশিয়ায় বেশ ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয়। তবে এবার রাশিয়ায় সাম্প্রতিক কয়েকটি হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কারণে এই দিবসের অনেক অনুষ্ঠানই কাটছাঁট করা হয়েছে।