লাদাখ সীমান্তের ওপারে সেনার হাত শক্ত করছে চীন। বিশেষ সূত্রে সেই খবর পেয়ে ভারত-চীনের আশু সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করল ভারতীয় পুলিশ। এ ব্যাপারে একটি রিপোর্ট তারা প্রকাশ করেছে লাদাখ পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের একটি সম্মেলনে। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তবে পুলিশ বিভাগ সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি ভারতীয় সেনাবাহিনী। আনন্দবাজার পত্রিকা।
বছর দুয়েক আগেই ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে গালওয়ান উপত্যকায় হাতাহাতি বাঁধে দুদেশের সেনার মধ্যে। ২০২০ সালের জুনে সেই ঘটনায় ভারতের ২৪ জন সৈন্য মারা যান।
অভিযোগ ছিল, চীনের সেনা লোহার রড, পাথর, পেরেক লাগানো লাঠি নিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় সেনাদের ওপর। পালটা মোকাবিলা করে ভারতীয় সেনাও। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন চীনা সেনা নিহত হলেও তা স্বীকার করেনি বেইজিং। ওই সংঘর্ষ নিয়ে দীর্ঘদিন উত্তেজনা চলেছিল লাদাখের ভারত-চীন সীমান্তে। শেষে প্রবল ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে একটা সময় লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা পিছিয়ে নিতে বাধ্য হয় চীন। কিন্তু লাদাখ পুলিশের রিপোর্ট বলছে, এবার আরও বেশি প্রস্তুতি নিচ্ছে চীনা সেনা। সীমান্তে সেনা পরিকাঠামো উন্নত করার দিকে জোর দিচ্ছে চীন। ২০ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের একটি সম্মেলনে লাদাখ পুলিশ এই রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টটি প্রকৃতপক্ষে গোপন গবেষণাপত্র।
যেখানে ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলো যাচাই করা হয়েছে। সীমান্ত পুলিশ এবং স্থানীয় পুলিশের থেকে সংগৃহীত সীমান্তসংক্রান্ত গোপন তথ্যের ভিত্তিতেই হয়েছে যাচাই প্রক্রিয়া। তাতে এতদিন যেভাবে ভারত এবং চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, লাদাখ পুলিশের ওই রিপোর্ট হাতে পেয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তাদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এমনকি, যে সম্মেলনে স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন, সেখানে প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এমনকি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এই রিপোর্ট নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
রয়টার্স ওই রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সরকারের চাপে পড়ে এবং লাদাখে সীমান্ত বিস্তারে চীনের আগ্রহের দরুন চীন ওই এলাকায় সেনা পরিকাঠামো বাড়াতেই থাকবে। যার জেরে দুদেশের মধ্যে ঘন ঘন সংঘর্ষ হতে পারে। গত ডিসেম্বরেই এক দফা সংঘর্ষ হয়ে গেছে ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাসংলগ্ন গালওয়ানে।