ইউক্রেনের যুদ্ধাহতদের প্রাণ বাঁচাতে ‘উড়ন্ত হাসপাতাল’

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৯:২৭ পিএম

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। একের পর এক হামলায় গুঁড়িয়ে দিচ্ছে বাড়ি-ঘর, হাসপাতাল, রাস্তা ঘাট। প্রাণ যাচ্ছে হাজারো মানুষের।
আহত হচ্ছেন শত শত সেনা-বেসামরিক নাগরিক। যুদ্ধাহত এ মানুষগুলোর প্রাণ বাঁচাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে একটি উড়ন্ত হাসপাতাল। প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সংবলিত বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি ইউক্রেন থেকে যুদ্ধাহতদের নিয়ে যায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশের হাসপাতালে। ‘উড়ন্ত হাসপাতাল’টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহযোগিতায় নরওয়ের মেডিকেল ইভাকুয়েশনের (মেডেভাক) একটি বিমান। খবর এএফপির।
বিমানটি ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে ৭০ কিলোমিটার (৪৪ মাইল) রেজেসজো বিমানবন্দরে অবতরণ করে আহতদের পোল্যান্ড, ডেনমার্ক ও জার্মানিসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশে নিয়ে যায়। বিমানটির ক্রুরা বেসামরিক কিন্তু চিকিৎসা দলটি নরওয়ের সামরিক বাহিনীর। ইইউ ইমারজেন্সি রেসপন্স কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের হুয়ান এসকালান্তে বলেন, ইউক্রেনের হাসপাতালগুলোর বোঝা কমানোর জন্যই আমরা তাদের অনুরোধে এটি প্রতিষ্ঠা করেছি।
নরওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, ইউক্রেনে হাসপাতাল, মাতৃসদন এবং মেডিকেল স্টোরেজ ইউনিটে বোমা হামলার কারণে প্রতি মাসে দেশটির প্রায় অর্ধ মিলিয়ন মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ইউক্রেনের প্রায় ৮৫৯টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলা করা হয়েছে।
দোনেস্ক অঞ্চলের একটি পরিখায় রুশ সৈন্যদের শেল দ্বারা আহত সৈনিক মাইকোলা ফেদিরকো (২২) বলেন, আমি ছুটিতে ডেনমার্কে ঘুরতে যেতে পছন্দ করতাম। কিন্তু এখন আমাকে ক্ষতের কারণে দেশটির হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডসে চিকিৎসা নেওয়া ওলেক্সি রাডজিভিল (২৮) বলেন, গাড়ি চালিয়ে বাখমুতে যাচ্ছিলাম। পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধের কেন্দ্রস্থল। হঠাৎ রাশিয়ার একটি শেল আমার গাড়িতে এসে পড়ে। আমি ছিটকে কয়েক মিটার দূরে গিয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর আমি হেসেছিলাম! কারণ আমি বেঁচে ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আশা করি আমি ভালো হয়ে যাব। কারণ নেদারল্যান্ডসের ইউরোপীয় ডাক্তাররা আমাকে ভালো চিকিৎসা দিচ্ছেন। উড়ন্ত হাসপাতালের চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট-কর্নেল হাকন আসাক বলেন, উড়ন্ত বিমানটি একটি ছোট নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের মতো। আমাদের এখানে এখনো পর্যন্ত কোনো মৃত্যু হয়নি।