শুরু হয়ে গেছে পবিত্র রমজান। প্রতিবছর পুরো মুসলিম বিশ্বে এ মাসকে ঘিরে শুরু হয় নানা আয়োজন। উৎসবমুখর পরিবেশে থাকে গোটা মুসলিম বিশ্ব। ১৯০ কোটি মানুষ। তবে এবারের পরিবেশটা অনেকটাই আলাদা। মূল্যবৃদ্ধির আতঙ্কে চাপা পড়ে গেছে রমজানের আনন্দ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা মহামারিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে দ্রব্যমূল্যে যেন আগুন লেগে গেছে। সব দেশেই একই হাল। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে হুহু করে।
নিত্যপণ্যের ‘গলাকাটা’ দামের আগ্রাসী ক্রোধে চুপসে গেছে মুসলিম বিশ্বের রমজান উদযাপন রেওয়াজও। তেল সম্পদে ভরপুর ধনী দেশখ্যাত মধ্যপ্রাচ্যের দশা সবচেয়ে খারাপ।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের কারণে অর্থনীতি অনেক আগে থেকেই ভঙ্গুর। ১২ বছর ধরে চলা যুদ্ধের জন্য ৯০ শতাংশেরও বেশি সিরীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। তাদের কাছে উৎসবের রমজান এখন সাধারণ দিনগুলোর মতোই!
ফেব্রুয়ারিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের তুরস্কে জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটে আরও চরম আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে গত মাসে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫৫ শতাংশে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে রমজান মাসের জীবনযাত্রায়।
মিসরের অবস্থাও ভয়াবহ। প্রতি বছর রমজানের ৩ মাস আগে থেকেই দ্রব্যমূল্যের ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। ময়দা, মাংস এবং পাস্তার মতো খাদ্যপণ্য জানুয়ারি থেকেই ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনবহুল এ দেশটিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি গত মাসে ৬১.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। করুণ অবস্থা লেবাননেরও। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ১২৩ শতাংশ। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে রমজানের সময়। যা খাবার টেবিল থেকে সামাজিক জমায়েত পর্যন্ত দৃশ্যমান হবে।
লেবাননে কাজ করে এমন একটি বিশিষ্ট দাতব্য সংস্থা আমেরিকান ইস্ট রিফিউজি এইড’র মতে, ঐতিহ্যবাহী রমজানে সন্ধ্যায় ইফতার থেকে রাতের খাবার দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষের কাছে ভীষণ কষ্টের হবে।