Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

সাদ্দামের পতনের ২০ বছর পরও সবচেয়ে বেশি নিখোঁজ ইরাকে 

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৬ পিএম

সাদ্দামের পতনের ২০ বছর পরও সবচেয়ে বেশি নিখোঁজ ইরাকে 

ইরাকে সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতের খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৌশলী হাজেম মোহাম্মদের মনে কিছুটা আশা জেগেছিল। তিনি ভেবেছিলেন, এবার হয়তো নিজের ভাইয়ের সন্ধান পাবেন তিনি।

১৯৯১ সালে সাদ্দামের শাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহের পর গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল তাকে। পরে মরদেহ একটি গণকবরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ২০০৩ সালের মার্চে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর মোহাম্মদের মতো অনেকেই আশা করেছিলেন যে স্বৈরশাসকের অধীনে নিহত বা নিখোঁজ হওয়া কয়েক হাজার মানুষের হদিস তারা শিগগিরই পাবেন। খবর রয়টার্সের।

২০ বছর কেটে গেলেও মোহাম্মদের আশা মেটেনি। সেদিন মোহাম্মদকেও গুলি করা হয়েছিল তার ভাইয়ের সঙ্গে। দুটি গুলি লাগলেও ভাগ্যের জোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ। তার মতো অগণিত ইরাকি তাদের নিহত বা নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে আজও অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।

ইরাকে সন্ধান মেলা কয়েক ডজন গণকবর সাক্ষ্য দিচ্ছে সাদ্দামের বাথ পার্টির অধীনে সংঘটিত নৃশংসতার। তবে গত দুই দশকে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ খুব একটা এগোয়নি। মোহাম্মদ বলেন, ‘গণকবর খুব বাজেভাবে খোঁড়া হচ্ছিল। অনেকটা এলোমেলোভাবে। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমার বিষয়টি গোপন রাখব। দেশে স্থিতিশীলতা না ফেরা পর্যন্ত চুপ থাকব।’

এই ২০ বছরের আইএস, আল কায়েদার মতো জঙ্গি সংগঠনের হামলা ও সাম্প্র্রদায়িক সংঘর্ষে আরও অনেক ইরাকির মৃত্যু হয়েছে। শিয়া মুসলিম মিলিশিয়ারাও এসবে পিছিয়ে নেই। 
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের মতে, ইরাকে আজ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিখোঁজ ব্যক্তি রয়েছে। সংখ্যাটা কয়েক লাখ পর্যন্ত হতে পারে। ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের শেষে সাদ্দামের সেনারা ইরাকের শিয়াদের ওপর হামলে পড়ে। মোহাম্মদ ও তার ভাইকে যেখানে গুলি করা হয়, ১০ বছর আগে সে স্থানে অভিজ্ঞ দল নিয়ে অভিযান চালান মোহাম্মদ। জায়গাটি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাজাফের উপকণ্ঠে। সেই গণকবর থেকে ৪৬ জনের দেহাবশেষ উত্তোলন করা হলেও, মোহাম্মদের ভাইকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মোহাম্মদ বিশ্বাস করেন, আরও অনেক মৃতদেহ এখনও সেখানে রয়েছে, যার হিসাব নেই। মোহাম্মদ বলেন, ‘যে দেশ তার অতীত নিয়ে কাজ করে না, সেদেশ বর্তমান বা ভবিষ্যৎ মোকাবিলা করতে পারবে না।’

নিহতদের শনাক্তকরণ এবং তাদের আত্মীয়দের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য একটি সরকারি সংস্থা কাজ করছে বলে জানিয়েছে শহিদ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা। তারা এ পর্যন্ত ২৬০টির বেশি গণকবর খুঁজে পেয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় অর্থ আর দক্ষ লোকবলের অভাবে বড় পরিসরে কাজ এগোচ্ছে না। সংস্থার বিভাগীয় প্রধান ইয়াসমিন সিদ্দিক বলেন, ‘প্রায় চার হাজার ৫০০টি উত্তোলিত লাশের মধ্যে প্রায় ডিএনএ পরীক্ষা করে ২ হাজার মানুষের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। ‘ইয়াসমিন সিদ্দিক যে কক্ষে বসেন সেখানে তাকে রাখা আছে ১৯৮০-৮৮ সালে সংগঠিত ইরাক-ইরান যুদ্ধে নিহত বা নিখোঁজদের ধ্বংসাবশেষ। শহিদ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মেহেদি ইব্রাহিম বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমরা প্রায় ২০০ জনকে শনাক্ত করি। তারপর নামগুলো সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করি।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম