ইউক্রেনে সাইরেন বাজলেই মানুষ ছোটেন টেলিগ্রামে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৪ পিএম
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক বছর শেষ। এখন আর মানুষ আগের মতো নেই। যারা সাইরেন বাজলেই ছোটাছুটি করতেন এদিক-ওদিক তারা এখন শান্ত। বিমান হামলাসহ যুদ্ধের খবর পেতে আতঙ্কিত না হয়ে খোঁজ রাখছেন টেলিগ্রামে। কোন সাইরেনে হামলা হতে পারে? ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নাকি কামিকাজে ড্রোন?
কখন তারা আক্রমণ ঘটাবে সবকিছুর আপডেটই দেয় অ্যাপটিতে নাগরিক উদ্যোগে খোলা চ্যানেলগুলো। ইউক্রেনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘টেলিগ্রাম’র ছোট ছোট এসব ‘খবরপাড়া’র পরিচালনায় রয়েছেন এক বা একাধিক ব্যাক্তি নিয়োজিত। তারা না ঘুমিয়ে বিনা বেতনে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
দেশটিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসনের পর থেকেই টেলিগ্রামের এ চ্যানেলগুলোকে জীবন রক্ষাকারী বার্তাকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করেন ইউক্রেনের মানুষ। জনসেবায় নিবেদিত এসব স্বেচ্ছাসেবক-ভিত্তিক চ্যানেলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তথ্য প্রচার করে। এমনই একটি সেবামূলক টেলিগ্রাম চ্যানেল ‘মনিটর’। গত বছর এপ্রিলে চ্যানেলটি তৈরি করা হয়। তারপর থেকেই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত পাবলিক সার্ভিসে পরিণত হয়েছে চ্যানেলটি।
মনিটর এ ধরনের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত একমাত্র টেলিগ্রাম চ্যানেল না। আরও কিছু বিশেষ চ্যানেল রয়েছে। ‘নিকোলায়েভ ভ্যানেক’ চ্যানেলটিও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চার লাখের বেশি ফলোয়ারদের যুদ্ধ সম্পর্কে অবগত রাখছে। পাশাপাশি বিমান হামলা সম্পর্কে তথ্য প্রদানের জন্য নিবেদিত ভাবে কাজ করছে। এছাড়া চ্যানেলটি ফ্রন্টলাইন অপারেশনের বিশদ বিবরণসহ ঘটনার বিশ্লেষণও প্রদান করে থাকে। কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন নিয়মিত ঘটনা। বেলারুশে রুশ মিগ-৩১ জেট বিমানের টেক-অফের কারণে সর্বাধিক ঘন ঘন সতর্কবার্তা ছড়িয়ে পড়ে। জেটটি হাইপারসনিক মিসাইল বহনে সক্ষম। চ্যানেলের মাধ্যমে জানা যায়, বিমানগুলো ইউক্রেনের কোন অংশে পৌঁছতে পারে।
এছাড়াও দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাদের ধ্বংসে কার্যকর কিনা। মনিটরের মতো টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো মিগ-৩১ এর কার্যকলাপ নিশ্চিত করে। সাইরেন বাজলেই টেলিগ্রাম রিপোর্ট করে, কৃষ্ণ সাগর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় হয়েছে কি হয়নি-সেটিও বলে দেয়।
মনিটর জানায়, সম্পূর্ণ যুদ্ধ ট্র্যাক করার জন্য স্পষ্টতই প্রচুর পরিমাণে তথ্য নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এর জন্য তারা সোশ্যাল মিডিয়াতে এক হাজারেরও বেশি উৎস অনুসরণ করে থাকেন। দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকটি রেডিও স্টেশনে দুই থেকে দশটি রেডিও তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। অপারেশনাল উৎস থেকে বার্তাও পান তারা।