Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধ আর কতদিন? 

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:২৩ পিএম

যুদ্ধ আর কতদিন? 

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বর্ষপূর্তি আজ। নানা সম্ভাবনা-আলোচনা, যুদ্ধের তাপ বাড়া-কমার মধ্যেই কেটে গেছে একটি বছর। যুদ্ধ শেষের কোনো নামগন্ধও নেই। এক বছর পুরোদমে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে দুই বছরে পদার্পণ করতে যাওয়া এই যুদ্ধের সমাপ্তি এ বছরই ঘটতে পারে বলে মনে করছেন রুশ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহাওয়ার। তবে এই মুহূর্তে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ার আশঙ্কা আছে বলে আলজাজিরার সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সোভিয়েত একাডেমি অব সায়েন্সেসের জ্যেষ্ঠ এই গবেষক।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিরক্ষানীতি, সামরিক মতাদর্শ, অস্ত্রবাণিজ্য ও সামরিকশিল্প বিষয়েও কাজ করেছেন তিনি। এসব বিষয়ে তিনি অনেক লেখালেখি আছে তার। যুদ্ধের আগাম দিন নিয়ে তিনি জানান, সবকিছু নিয়ে তো আর ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়। তবে তিনি এখন যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন। তিনি জানান, রাশিয়া এই মুহূর্তে আর্থিক সংকটের মধ্যে আছে। যুদ্ধক্ষেত্রেও খুব বেশি সুবিধা করতে পারছে না। তবে রণাঙ্গনে কখন কী ঘটে যায়, তা কেউ জানে না। শেষ পর্যন্ত কোন পক্ষ ছিনিয়ে নেবে জয়ের মুকুট, তা ধারণা করাও অসম্ভব ব্যাপার। যদিও এই প্রশ্নে অন্যান্য বিশেষজ্ঞের মতোই মত দেন পাভেল। বলেন, ‘যুদ্ধে কে জিতবে, তিনি তা বলতে পাড়ছেন না। কারণ যুদ্ধটা ফুটবল খেলার মতো। মাঠে কে কখন জিতে যায়, তা বলা মুশকিল। খেলার শেষ সময়ের গোলও ঘুরিয়ে দিতে পারে মোর। 

তিনি বলেন, অনেকেই আজকাল বলছেন, রাশিয়া আসলে যতটা শক্তিশালী ভাবা হয়েছিল, ততটা নয়। কারণ হিসাবে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার দুর্বলতার উদাহরণ টানছেন। তবে আমি বলতে চাই, রাশিয়া অতটাও দুর্বল নয়, যেমনটি আপনারা ভাবছেন, প্রচার করছেন। শক্তির প্রশ্নে রাশিয়াকে একদম খারিজ করে দেওয়া যায় না। এখানেও কিন্তু আছে। পাভেল বলেন, পুতিন ভেবেছিলেন রুশ বাহিনী খুব দ্রুত ইউক্রেন দখল করতে পারবে। তবে অতটা শক্তিশালীও রাশিয়া নয়। রশ বাহিনী আধুনিক যুদ্ধের জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। 

যুদ্ধক্ষেত্রে বৈশ্বিক প্রবণতা থেকে রুশ বাহিনী ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে বিচ্ছিন্ন। তিনি বলেন, রুশ বাহিনী এখনো ট্যাংকনির্ভর যুদ্ধের জগতে বসবাস করছে। তবে হাতে প্রচুর ট্যাংক থাকলেই অনায়াসে যুদ্ধ জয় করা সম্ভব-এ ধারণা থেকে রাশিয়াকে বের হয়ে আসতে হবে। পাভেল বলেন, রাশিয়া এই সংঘাতের জন্য বুদ্ধিভিত্তিক, মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত ছিল না। এদিকে যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি তুলনামূলক ভালো ছিল বলে জানান পাভেল। বলেন, ইউক্রেনের সামরিক কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ ভালো। তারা পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে উন্নতমানের ভারী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও পাচ্ছে।

রাশিয়ার যুদ্ধে জড়ানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে অনেক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে সামরিক কারণ একটি। ইউক্রেনের মাটিতে বসে মস্কোকে নিশানা করে পশ্চিমাদের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনসহ সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতেই পুতিন এ যুদ্ধে গেছেন। এছাড়া ভূরাজনৈতিক কারণও রয়েছে। ইউক্রেনীয়রা আসলে রুশদেরই অংশ-এমন ধারণা থেকেও দুই দেশের মানুষকে পুনরায় একত্র করতে চেয়েছেন পুতিন। দেশটির সঙ্গে পশ্চিমাদের ঘনিষ্ঠতাকেও দুর্বল করতে চেয়েছেন। 

পশ্চিমা জোটের আধিপত্য ভেঙে বিশ্বের মানচিত্রে বহু মেরুকরণের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি বিগত বছরই কিয়েভের পতনের আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিনি এখন তার মত পরিবর্তন করেছেন। বলেন, রাশিয়া এই যুদ্ধে হারছে-কৌশলগতভাবে আর কারিগরিভাবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম