ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলা চালাচ্ছে সামরিক অভিযানের বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে।
বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের শিল্প শহর বাখমুতের দখল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলছে।
গত বছরের জুলাই থেকে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনারা তীব্র সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। ২০২২ সালের গ্রীষ্মের পর বড় ধরনের জয় পেতে মরিয়া মস্কো।
রুশ সেনারা পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক দখলের লক্ষ্যে অটল।দুটি অঞ্চল মিলে ভূখণ্ডটি দোনবাস হিসেবে পরিচিত। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর দিকেই দোনবাস দখলের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বাখমুতের যুদ্ধে উভয়পক্ষে ব্যাপক প্রাণহানি হচ্ছে। গ্রীষ্মকালীন দিনগুলোর তীব্র লড়াই, বাখমুত ঘিরে সাম্প্রতিক সংঘাতের বৃদ্ধি এবং পাশের শহর সলেদার দখল মিলিয়ে এক বছর আগে শুরু হওয়া লড়াইয়ে ইউক্রেনীয় সেনা হতাহতের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে হতাহতের সংখ্যা অন্তত ১ লাখ হতে পারে।
বাখমুতের হতাহতের কথা এখনও জানা যায়নি। তবে ডিসেম্বরে ইউক্রেনের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, শহরটি দখলের লড়াইয়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ রুশ সেনা নিহত হচ্ছে।
যুদ্ধ শুরুর আগে বাখমুতের জনসংখ্যা ছিল ৭০ হাজার। এখনকার শহরটি যেনও আগের সেই বাখমুতের খোলস। ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম ইউক্রেনস্কা প্রাভদার তথ্য অনুসার, বাখমুতের ৯০ শতাংশ মানুষ পালিয়েছেন।
কয়েক হাজার বাসিন্দা রয়েছেন যারা প্রতিদিন গোলাগুলি প্রত্যক্ষ করছেন। বাখমুতের প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সেনাদের পরিস্থিতি মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরিখা যুদ্ধের কথা।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বাখমুতের রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এরপরও এখন পর্যন্ত শহরটি দখলে রাশিয়া কোনও কৌশলগত অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ।
ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকে পরিণত হয়েছে শহরটি। ‘বাখমুতে অটল!’ ইউক্রেনীয় সেনা, তাদের সমর্থক, এমনকি জেলেনস্কির কাছে জাতীয় রণ-হুঙ্কারে পরিণত হয়েছে। এটি দখলে রাশিয়াকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলে যুদ্ধের আগামী দিনগুলো ইউক্রেনীয় সেনাদের মনোবল থাকবে অটুট।
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, কৌশলগত বিচারে বাখমুতের গুরুত্ব খুব সামান্য। কিন্তু তবুও তারা মনে করেন, পুরো দোনবাস অঞ্চল দখলের লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাশিয়া শহরটিকে ব্যবহার করবে।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলে আসছেন, বসন্তের মধ্যেই দোনস্ক ও লুহানস্ক দখলের লক্ষ্য রয়েছে মস্কোর।
রাশিয়ার কাছে বাখমুত প্রতীকী অর্থে খুব গুরুত্বপূর্ণ।এই মুহূর্তে সেখানকার পরিস্থিতি খুব জটিল।