চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী পাঠাবে না ইউরোপ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩২ পিএম
সব প্রস্তুতি শেষ করেও শেষ মুহূর্তে চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে কোনো নভোচারী পাঠাবে না বলে জানিয়েছেন ইউরোপ। ইউরোপীয় মহাকাশ স্টেশনের পরিচালকের বরাতে নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনডিটি এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়- ২০১৭ সাল থেকে চীনা নভোচারীদের সঙ্গে ইউরোপিয়ান মহাকাশ এজেন্সি একসঙ্গে কাজ করে আসছিল। উদ্দেশ্য ছিল ২০২২ সালের মধ্যে চীনের এই মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী পাঠানো।
হিন্দুস্তান টাইমস ও এএনআইয়ের খবরে বলা হয়, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে বেইজিং। বর্তমান আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের মেয়াদ ২০৩০ সালের মধ্যেই শেষ হবে। যেটিতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, ইউরোপ, কানাডা সরাসরি জড়িত৷ যদিও রাশিয়া ২০২৪ সালের মধ্যেই নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে।
বেইজিং থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, জার্মানি ইতালিসহ মোট ১৭টি দেশ তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে। যদিও ইতোপূর্বে চীন তিয়ানগংয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দিলে যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
ইন্দো-প্যাসিফিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনসের (আইপিসিএসসি) তথ্যমতে, নাসার প্রশাসক বিল নেলসন সতর্ক করেছেন যে, চীন চাঁদের সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোকে নিজের বলে দাবি করতে পারে। কারণ দেশটি মহাকাশ অনুসন্ধানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুবিধা পেতে চায়।
২০১১ সালে নাসার মহাকাশ কার্যক্রম থেকে চীনকে বাদ দেয়ার পর নিজস্ব উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করে চীন। গতবছরের নভেম্বরে নিজেদের মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগংয়ে তিনজন নভোচারী পাঠিয়েছে দেশটি।
মহাকাশে নিজেদের স্টেশনে থাকার জন্য চীনের এটাই প্রথম নভোচারী পাঠানোর ঘটনা।
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে চীন বিশ্বের তৃতীয় দেশ যারা মহাকাশে নভোচারী পাঠিয়েছে এবং একই সঙ্গে মহাকাশে স্পেস স্টেশন বা মহাকাশ কেন্দ্র তৈরি করছে। এর আগে যে দুই দেশ এই দুটি উদ্যোগ নিয়েছিল তারা হলো, সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
২০২১ সালে চীন তাদের মহাকাশ কেন্দ্র তিয়ানগংয়ের প্রথম মডিউল কক্ষপথে স্থাপন করেছিল। চীনা ভাষায় তিয়ানগং নামের অর্থ ‘স্বর্গের প্রাসাদ।’ তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ নিয়ে চীনের পরিকল্পনা খুবই উচ্চাকাঙ্ক্ষী।
চীন আশা করছে, বর্তমানে যে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন আছে, তাদের মহাকাশ কেন্দ্রটি ভবিষ্যতে তার জায়গা নেবে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র আইএসএসকে চীনা নভোচারীদের ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। কারণ এই মহাকাশ কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের নাসা। আর নাসা কোনো তথ্য চীনের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবে না, এমন নিষেধাজ্ঞা সংবলিত আইন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। তবে আইএসএস-এর মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে। আগামী ২০৩১ সালে এর মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে একে অকার্যকর করে কক্ষপথ থেকে সরিয়ে নেয়া হবে।