ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, তখন ঝুঁকিমুক্ত বিকল্প কিছু নেই। বরং ঝুঁকি আরও বেশি হবে, যদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধে জয়ী হন।
নিউজ উইক জানিয়েছে, শনিবার জার্মানির মিউনিখ সম্মেলনের অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় ন্যাটোপ্রধান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করছেন, ইউক্রেনের প্রতি আমাদের সমর্থন ঝুঁকি তৈরি করছে। তবে আমি পরিষ্কার বলতে চাই, ঝুঁকিমুক্ত কোনো বিকল্প নেই। বরং সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি হবে, যদি পুতিন এই যুদ্ধে বিজয়ী হন।’ জোটের বাইরেও ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বলেন স্টলটেনবার্গ।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ন্যাটোর মহাসচিব বলেন, পুতিন যদি এই যুদ্ধে জয়ী হন, তা হলে অন্য স্বৈরশাসকরা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বল প্রয়োগে উৎসাহিত হবে। এর ফলে একদিকে যেমন বিশ্ব বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়বে, তার চেয়েও বেশি ঝুঁকিতে পড়বে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
‘সুতরাং এ মুহূর্তে ইউক্রেনকে শুধু নৈতিকভাবে সমর্থন করাই যথেষ্ট নয়; বরং এটি আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থের বিষয়,’ বলেন স্টলটেনবার্গ।
মিত্রদের প্রতি প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে ন্যাটোপ্রধান বলেন, ‘পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। কারণ রাশিয়া এমন একটি ইউরোপ চায়, যেখানে প্রতিবেশীদের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে পূর্ব ইউরোপের রাজনীতি ও সমসাময়িক রাশিয়ার বিষয়ে বস্টন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইগর লিউকস বলছেন, পুতিনের সম্প্রসারণ নীতির মধ্যে পশ্চিমাদের হুমকি লুকিয়ে আছে।
তিনি বলেন, ‘পুতিন ক্রিমিয়া জয় করে যখন দোনবাসে হস্তক্ষেপ শুরু করেছিলেন, তখন পশ্চিমরা এই আশায় কিছুই করেনি যে, তিনি (পুতিন) তার সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রায় সন্তুষ্ট থাকবেন। অথচ পুতিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, ক্রিমিয়া তার জন্য যথেষ্ট নয়, তাই তিনি বাকি অংশের দখল নিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন।’
প্রফেসর ইগর বলছেন, এ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া দরকার যে, আগ্রাসনকারী থেকে পিছু হটলে শান্তি নিশ্চিত হয় না। বরং এটি তাকে নিরুৎসাহিত করে এবং তার ঘরোয়া প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে তাকে দুর্বল করে দেয়।