দেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র কার্যক্রম নিয়ে পাকিস্তানি আলেমদের ফতোয়া
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:২৩ পিএম
রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র কার্যক্রম নিয়ে একটি ফতোয়া (ধর্মীয় সিদ্ধান্ত) জারি করেছেন পাকিস্তানের শীর্ষ আলেমরা।
এতে বলা হয়েছে- পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ যেকোনো ধরনের সশস্ত্র কার্যক্রম রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল; যা ইসলামি আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ ও হারাম। খবর জিয়ো নিউজের।
সোমবার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘পয়গামে পাকিস্তান’ নামে একটি জাতীয় সেমিনারে পাকিস্তানের সবমতের আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এতে অংশ নিয়ে প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ মুফতি তাকি উসমানি বলেন, নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছিল এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিল, তারা ‘বিদ্রোহী’।
পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানে তার সফরের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘তালেবান সরকারও টিটিপির কার্যকলাপে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।'
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আয়োজিত এ সেমিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল ছাড়াও পাকিস্তানের বরেণ্য আলেমরা বক্তব্য রাখেন।
পাকিস্তানের সংবিধানই দেশটির মুসলিম পরিচয় বহন করে উল্লেখ করে মুফতি তাকি উসমানি বলেন, পাকিস্তান একটি মুসলিম রাষ্ট্র। পাকিস্তানের সংবিধানই এ রাষ্ট্রটির জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে। তাই এ দেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র কার্যক্রম প্রকাশ্য বিদ্রোহের শামিল; যা নাজায়েজ এবং হারাম। পাকিস্তানের আলেমরা দেশের বিরুদ্ধে কোনো সশস্ত্র কার্যক্রমকে সমর্থন করেন না।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া জিহাদের ফতোয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নিঃসন্দেহে আমরা রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জিহাদের ফতোয়া দিয়েছিলাম। এখনো আমরা সেটির ওপরে রয়েছি; কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো- একটি মুসলিম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিভাবে জিহাদের ফতোয়া কার্যকর করা হবে?
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষকে ঘিরে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে ব্যাপক অরাজকতা চলছে।
২০২২ সালজুড়ে পাকিস্তানে অন্তত ১৫০টি হামলা চালিয়েছে টিটিপি। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে গত নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে করা একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি থেকে সরে আসে টিটিপি।
আফগানিস্তান তালেবানের মধ্যস্থতায় ওই চুক্তি করা হয়েছিল। চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের পর টিটিপি যোদ্ধাদের আরও বেশি হামলা চালানোর আদেশ দেন গোষ্ঠীটির নেতারা।
এখন তারা ব্যাপক হামলায় অস্থির করে তুলেছে দেশকে। আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ইসলামাবাদ পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে।
টিটিপি সংগঠকেরা খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং আশপাশের এলাকায় নিজস্ব প্রশাসক নিয়োগেরও ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
مفتی تقی عثمانی پیغام پاکستان قومی کانفرنس سے خطاب کر رہے ہیں pic.twitter.com/Evv4QQJIV5
— 24 News HD (@24NewsHD) January 23, 2023